টঙ্গী এলাকায় পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে ছয় বছর পর স্বামী শফিকুল ইসলাম স্বপনকে (৩২) গ্রেফতার করেছে গাজীপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। রবিবার (২৫ ডিসেম্বর) ভোরে জেলার জয়দেবপুর থানাধীন লুটিয়ারচালা গুচ্ছগ্রাম এলাকার নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
আসামি মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার কমলাপুর গ্রামের মৃত সিরাজ উদ্দিনের ছেলে। তার স্ত্রী শিল্পী আক্তার শিলা (২২) জেলার শ্রীপুর উপজেলার প্রহ্লাদপুর ইউনিয়নের মরিচারচালা গ্রামের সোলেমানের মেয়ে। সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে গাজীপুর পিবিআই-এর পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গাজীপুর পিবিআই-এর এসআই জামাল উদ্দিন জানান, শিল্পী ২০১৬ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর বিকাল সাড়ে ৪টায় মরিচারচালা গ্রামের তার খালার বাড়ি থেকে বের হন। এরপর স্বামীর ভাড়া বাসায় যান। একই বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর টঙ্গী থানাধীন উত্তর দত্তপাড়া টেকবাড়ী মৃত আব্দুল রশিদের বাড়ি থেকে তার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে। নিহতের খালা বেবী বেগম বাদী হয়ে টঙ্গী থানায় মামলা করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জানান, জিজ্ঞাসাবাদে আসামি শফিকুল ইসলাম স্বপন স্বীকার করেন, গাজীপুরের ভিআইপি পরিবহনে চালকের সহকারী (হেলপার) হিসেবে কাজ করতেন। হত্যার পাঁচ বছর আগে শিল্পীর সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্কের পর বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকে তারা টঙ্গীর এরশাদ নগর এলাকায় ভাড়া বাসাতে বসবাস করতে থাকে। তার স্ত্রী মাদকসহ বিভিন্ন উচ্ছৃঙ্খল কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকায় প্রায় ঝগড়া-বিবাদ লেগে থাকতো। পরে তার মা তাদেরকে বাড়ি থেকে বের করে দিলে টঙ্গীর দত্তপাড়া (টেকবাড়ী) এলাকার মৃত আব্দুল রশিদের বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করেন। ২০১৬ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে আবার ঝগড়া হলে ওই দিন রাত ৪টায় স্বপন স্ত্রী ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় গলা চেপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ঘরের দরজা বাইর থেকে তালা দিয়ে পালিয়ে যান।
পিবিআই পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান জানান, টঙ্গী থানা পুলিশ মামলাটি তদন্ত করে রহস্য উদঘাটন না হওয়ায় আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। আদালত মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য স্বপ্রণোদিত হয়ে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন। পরে পিবিআই মামলাটি তদন্ত করে তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় নিহতের স্বামীকে গ্রেফতার করে এবং মৃত্যুর প্রকৃত কারণ উদঘাটন করে।
Leave a Reply