জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সভাপতি আব্দুর রব বলেছেন, রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতার জন্য, রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য— বর্তমান অসাংবিধানিক সরকার নিজেরাই এক হুমকি।
সোমবার (১০ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র দিবস উপলক্ষে গণতন্ত্র মঞ্চ আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
আ স ম আব্দুর রব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আজকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে হত্যা করছে। আজকে তারা (আওয়ামী লীগ) মুক্তিযুদ্ধকে মৃতুদণ্ড দিয়েছে, তারা মুক্তিযুদ্ধকে ফাঁসি দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতার জন্য, রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য— বর্তমান অসাংবিধানিক সরকার নিজেরাই এক হুমকি। রাষ্ট্রের দর্শন, জনগণের আকাঙ্ক্ষা, স্বাধীনতার বৈশিষ্ট্য পর্যালোচনা না করে, কোনও কিছু বিবেচনা না করে, তড়িঘড়ি করে লুটের মালের মতো ক্ষমতা দখল করেছে আওয়ামী লীগ। অতি ক্ষমতার লোভ রাষ্ট্র বিনির্মাণের সব সম্ভাবনাকে নস্যাৎ করে দিয়েছে। জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট করেছে। মুক্তিযুদ্ধে জাতি, ধর্ম, দলমত নির্বিশেষে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলাম। আওয়ামী লীগ সেটা ধ্বংস করে দিয়েছে। ফলে ১৯৭২ সালে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হাতছাড়া হয়ে পড়ে। এখন আমাদের মৌলিক কর্তব্য হচ্ছে— এই কর্তৃত্ববাদী, অসাংবিধানিক সরকারকে অপসারণ করে গণমুখী রাষ্ট্র নির্মাণ করা।’
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘৭২ সালে একটি নতুন নির্বাচনের দরকার ছিল। ৭০ সালের গণপরিষদই ৭২ সালের গণপরিষদ হলো। ফলে সংবিধান প্রণয়নের ক্ষেত্রে গোড়াতেই একটি স্বৈরতান্ত্রিক কাঠামো তৈরি করা হয়েছে। সেই পরিষদ ক্ষমতার কাঠামো আবার স্বৈরতান্ত্রিকভাবে একজনের হাতে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে দেশের ভালো, মন্দ একজনের ইচ্ছা, অনিচ্ছার ওপর নির্ভর করছে। প্রথম আলোর নিবন্ধন বাতিল চেয়ে মানববন্ধন হয়। সবচেয়ে লজ্জার বিষয়— সেই মানববন্ধনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অংশ নিয়েছেন। দেশের পরিস্থিতি যে আজ কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে— এই একটি ঘটনা থেকে সেটা অনুধাবন করা যায়।’
আলোচনা সভায় নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘স্বাধীনতার কান টানতে টানতে এত লম্বা করা হয়েছে যে, এখন সেই কানই চেনা যাচ্ছে না। সংবিধানে গণতন্ত্রের অধিকারের কথা লেখা থাকলেই কি হবে? সেটা বাস্তবায়নের কথাও ভাবতে হবে। বর্তমানে সরকার দেশকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে প্রচার করছে। কিন্তু বিদেশে এটা গুম, খুনের দেশ হিসেবে পরিচিত। এই অবস্থা থেকে উত্তেরণের জন্য রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আনতে হবে। এজন্য একটি বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তুলতে হবে।’
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন— রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ূম, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান রিজু প্রমুখ।
Leave a Reply