বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য আগামী জানুয়ারির প্রথমার্ধে লন্ডনে যাচ্ছেন। যদিও দিনক্ষণ এখনো চূড়ান্ত হয়নি, তবে তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানিয়েছেন যে চিকিৎসকদের পরামর্শে এই যাত্রার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
আজ বুধবার প্রথম আলোকে জাহিদ হোসেন বলেন, ‘জানুয়ারির প্রথমার্ধে লন্ডনে যাওয়ার বিষয়টি নির্ধারিত হলেও যাত্রার তারিখ চূড়ান্ত করা হয়নি। খুব শিগগিরই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
বিএনপির সূত্র জানায়, দীর্ঘ যাত্রার বিশেষায়িত এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে খালেদা জিয়াকে প্রথমে লন্ডনে নেওয়া হবে। সেখান থেকে তাঁকে একটি মাল্টিডিসিপ্লিনারি মেডিকেল সেন্টারে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত বলে জানা গেছে।
সফরসঙ্গী হিসেবে অন্তত ১৫ জনের একটি তালিকা ইতিমধ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে।
এর আগে ২০১৭ সালের ১৬ জুলাই চিকিৎসার জন্য লন্ডন গিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। সেসময় তিনি যুক্তরাজ্যের চিকিৎসক ডা. হ্যাডলি ব্যারির তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিয়েছিলেন। তবে মামলার পরোয়ানা মাথায় নিয়ে ১৮ অক্টোবর দেশে ফিরে আসেন।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতির দুই মামলায় খালেদা জিয়াকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। দুই বছরের বেশি সময় তিনি কারাগারে ছিলেন। ২০২০ সালের ২৫ মার্চ আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দেয়। ছয় মাস পরপর মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হলেও তাঁকে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি।
৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া আর্থ্রাইটিস, হৃদ্রোগ, ফুসফুস, লিভার, কিডনি ও ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন। দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার কারণে তাঁকে বারবার হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে। দেশি-বিদেশি চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে দেশেই তাঁর অস্ত্রোপচার করা হয়।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরদিন, ৬ আগস্ট খালেদা জিয়াকে নির্বাহী আদেশে মুক্তি দেওয়া হয়। এরপর থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে বিদেশে নেওয়ার প্রস্তুতি শুরু হয়।
দেশ ও বিদেশের চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী, জানুয়ারিতে খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রা নির্ধারণ করা হচ্ছে। তাঁর এই যাত্রা এবং পরবর্তী চিকিৎসা কার্যক্রম নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।