কোরিয়ার কোম্পানি পসকো ইন্টারন্যাশনাল করপোরেশন প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের জন্য এক কার্গো তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহের কাজ পেয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকায় সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এ প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে।
এই প্রস্তাব অনুযায়ী, এক কার্গো সমান ৩৩ লাখ ৬০ হাজার মিলিয়ন মেট্রিক ব্রিটিশ থার্মাল ইউনিট (এমএমবিটিইউ) এলএনজির মূল্য ধরা হয়েছে প্রতি এমএমবিটিইউ ১৪ দশমিক ৬৯ মার্কিন ডলার। পুরো কার্গো সরবরাহে ব্যয় হবে ৬৯৩ কোটি টাকা। এই এলএনজি ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসে সরবরাহ করা হবে।
এর আগে, গত ৪ নভেম্বর জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে স্পট মার্কেট থেকে ৫৯ কার্গো এলএনজি আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়। আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বানের পর, তিনটি প্রতিষ্ঠান কারিগরি ও আর্থিকভাবে রেসপনসিভ হয়। এর মধ্যে পসকো ইন্টারন্যাশনাল সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে নির্বাচিত হয়। অন্য দুই প্রতিষ্ঠান সিঙ্গাপুরের পেট্রো চায়না ইন্টারন্যাশনাল ১৪ দশমিক ৮৬ ডলার এবং যুক্তরাষ্ট্রের এক্সিলারেট এনার্জি ১৪ দশমিক ৮৪ ডলার দর প্রস্তাব করে।
আজকের ক্রয় কমিটির বৈঠকে রাশিয়া, সৌদি আরব, মরক্কো এবং দেশীয় প্রতিষ্ঠান কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি (কাফকো) থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টন সার কেনার প্রস্তাবও অনুমোদন করা হয়েছে। সারগুলোর মধ্যে রয়েছে ৬০ হাজার টন ইউরিয়া, ৩০ হাজার টন এমওপি, এবং ৪০ হাজার টন ডিএপি। এসব সার কেনায় মোট ব্যয় হবে ৬৩৪ কোটি ৩২ লাখ টাকা।
বৈঠকে স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতায় দুটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। এতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২৭৬ কোটি ৬৬ লাখ টাকা।
১. ‘ক্লাইমেট অ্যান্ড ডিজাস্টার রিসিলিয়েন্ট স্মল স্কেল ওয়াটার রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট প্রজেক্ট’ শীর্ষক প্রকল্প: এই প্রকল্পে পরামর্শক নিয়োগের জন্য নর্থইস্ট হাইড্রোলিক কনসালট্যান্ট, মেটা রিসার্চ এবং রিসোর্স প্ল্যানিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট কনসালট্যান্ট নামের তিনটি প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে কাজ পেয়েছে। এতে ব্যয় হবে ১৯৬ কোটি ৯ লাখ টাকা।
২. ‘আরবান প্রাইমারি হেলথ কেয়ার সার্ভিসেস ডেলিভারি প্রকল্প’ (২য় পর্যায়, ২য় সংশোধিত): নগর ও পৌরসভাগুলোতে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীকে ১৬ ধরনের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের এই প্রকল্পে এনজিওগুলোর সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এই চুক্তির জন্য অতিরিক্ত ব্যয় হবে ৮২ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।
সংক্ষেপে: বৈঠকে এলএনজি সরবরাহ, সার কেনা, এবং স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য ব্যয় অনুমোদনের মাধ্যমে জাতীয় উন্নয়ন কার্যক্রমে অগ্রগতি সাধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।