বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, দেশের রাজনীতি ও গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য নতুন রাজনৈতিক দলের উত্থান একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। তিনি মনে করেন, গণতন্ত্রের চর্চা নিশ্চিত করতে বহুদলীয় ব্যবস্থা অপরিহার্য।
রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বুধবার সন্ধ্যায় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে যুক্ত হয়ে তারেক রহমান এ কথা বলেন। তিনি লন্ডন থেকে বক্তব্য দেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের শীর্ষ নেতারা।
তারেক রহমান বলেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া টিকিয়ে রাখতে সংস্কার এবং নির্বাচন উভয়ই জরুরি। তিনি বলেন, “রাষ্ট্র, রাজনীতি এবং রাজনৈতিক দলের গুণগত পরিবর্তনের জন্য সংস্কার একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। একইসঙ্গে গণতন্ত্রের টেকসই কাঠামো নিশ্চিত করতে নির্বাচন সবচেয়ে কার্যকর পন্থা।”
তিনি আরও বলেন, বিদ্যমান ব্যবস্থাকে সময়োপযোগী করতে সংস্কার প্রয়োজন। তবে তিনি সতর্ক করেন, যদি এসব সংস্কার কর্মসূচির আড়ালে জনগণের দুর্দশা উপেক্ষা করা হয়, তাহলে সরকারকে কঠিন প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে।
তারেক রহমান বলেন, “জনগণের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত না হলে গণতন্ত্র, মানবাধিকার বা পুঁথিগত সংস্কার কিছুই টেকসই হবে না। বিএনপি মনে করে, জনগণের রায়ই সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ।”
তিনি উল্লেখ করেন, জনগণ চাইলে নতুন রাজনৈতিক দল গড়ে উঠবে, যা গণতান্ত্রিক রীতি। কিন্তু যারা জনগণের রায়ের মুখোমুখি হতে ভয় পায়, তারাই বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে।
তারেক রহমান বলেন, “বিএনপি জনগণের স্বার্থে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রেখেছে। আমরা চাই না অন্তর্বর্তী সরকার ব্যর্থ হোক, কারণ সেটি গণতন্ত্রের পক্ষে কোনো ইতিবাচক ফল বয়ে আনবে না।”
নতুন রাজনৈতিক দলের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, “রাষ্ট্র ও রাজনীতির প্রয়োজনে বিএনপি সব গণতান্ত্রিক উদ্যোগকে স্বাগত জানায়। বিএনপি তার জন্মলগ্ন থেকেই বহু দলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। জনগণ কোন দলকে গ্রহণ করবে, তা নির্বাচনের মাধ্যমে নির্ধারিত হবে।”
আলোচনা সভায় ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিনের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন সংগঠনের সাবেক নেতারা। তাঁদের মধ্যে ছিলেন শামসুজ্জমান দুদু, আসাদুজ্জামান রিপন, আমানউল্লাহ আমানসহ অনেকে।
বক্তারা বলেন, ছাত্রদল সবসময় গণতান্ত্রিক চর্চার পক্ষে থেকে দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করেছে। তাঁরা আগামী নির্বাচনে দলের নেতা-কর্মীদের একাত্ম হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।
তারেক রহমান জনগণের উদ্দেশে বলেন, “আপনারা ধৈর্য হারাবেন না। নির্বাচনের জন্য মানসিক প্রস্তুতি নিন এবং জনগণের রায় প্রতিষ্ঠায় কাজ করুন। নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা রাখুন।”
এই বক্তব্যের মাধ্যমে তারেক রহমান বিএনপির গণতন্ত্র ও বহুদলীয় ব্যবস্থার প্রতি অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।