আজ ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সময় : দুপুর ১:১৪

বার : শনিবার

ঋতু : গ্রীষ্মকাল

শেখ হাসিনার দু:শাসনের ৫৪০৬ দিন শ্রমিকদের উপরে ফ্যাসিবাদের গুলি

শেখ হাসিনার দু:শাসনের ৫৪০৬ দিন

শ্রমিকদের উপরে ফ্যাসিবাদের গুলি


শেখ হাসিনার দু:শাসনের ৫৪০৬ দিন

শেখ হাসিনার দু:শাসনের ৫৪০৬ দিন

নিজস্ব প্রতিনিধি

মজুরি বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলনরত বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের বড় উৎস গার্মেন্টস শিল্পে শ্রমিকদের উপর নির্বিচারে গুলি চালাচ্ছে শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদ অনুগত পুলিশ বাহিনী। পুলিশের গুলিতে গত ৮ দিনে দুই শ্রমিক নিহত হয়েছেন। আরো বহু শ্রমিক আহত হয়েছেন পুলিশের গুলিতে।

দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে নিম্ন মজুরির এই শ্রমিকরা জীবান বাঁচানোর তাগিদে মজুরি বৃদ্ধির জন্য বিক্ষোভ করছেন। এই বিক্ষোভ দমন করতে রাষ্ট্রীয় টাকা কেনা গুলি ব্যবহার করছে শ্রমিকদের উপরে। শুধু পুলিশ বললেও ভুল হবে। পুলিশের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরাও শ্রমিকদের উপর হামলা চালানোর খবর বের হয়েছে আওয়ামী গণমাধ্যমে। মিরপুরে শ্রমিকদের বিক্ষোভ দমনে আওয়ামী সন্ত্রাসীর অস্ত্রহাতে মহড়ার ছবি ইতোমধ্যে ভাইরালও হয়েছে।

সবশেষ বুধবার (৮ নভেম্বর) গাজীপুরে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন করা পোশাক শ্রমিকদের ওপর গুলি চালায় পুলিশ। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান ২৪ বছর বয়সী আঞ্জুয়ারা খাতুন। তিনি কোনাবাড়ি জরুন এলাকার ইসলাম গার্মেন্টস লিমিটেডে সেলাই মেশিন অপারেটর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এছাড়া গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় বেলা ১২টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয় জামাল উদ্দিন নামে আরও এক শ্রমিককে।

এর আগে গত ৩০শে অক্টোবর গাজীপুর জেলার বাসন থানার মালেকের বাড়ি এলাকায় পুলিশের গুলিতে রাসেল হাওলাদার (২৬) নামে এক গার্মেন্টস শ্রমিক নিহত হন। তিনি এনার্জিপ্যাক ডিজাইন গার্মেন্টসে ইলেক্ট্রিশিয়ান পদে চাকরি করতেন।

নিহতের এক সহকর্মীর ভাষ্য মতে, রাসেলের বুকে টার্গেট করে গুলি করা হয়েছিল।

গত ৩১শে অক্টোবর ঢাকার মিরপুরের পল্লবী এলাকায় বিক্ষোভরত পোশাকশ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে মাঠে নেমেছিলেন স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। তাঁদের মধ্যে আওলাদ হোসেন ওরফে লাক্কু নামের যুবলীগের এক সন্ত্রাসীকে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে দেখা গেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আওলাদ ওই আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে কয়েকটি গুলিও ছুড়েছিলেন।

এর আগে চলতি বছরের ২৫শে জুন পোশাক শ্রমিকদের বেতন-বোনাস নিয়ে মালিক পক্ষের সঙ্গে আলোচনা শেষে ফেরার পথে দুর্বৃত্তদের হামলায় নিহত হন বাংলাদেশ গার্মেন্ট অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়ার্কার্স অ্যাসোসিয়েশনের গাজীপুর জেলার সভাপতি মো. শহীদুল ইসলাম।

শ্রমিকনেতা শহীদুল ইসলামের মাথায় কিছু একটা দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করা হয়। এতে তার মাথার পেছনের অংশের একটি হাড় ভেঙে যায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই অজ্ঞান হয়ে পড়েন তিনি। এরপর হাসপাতালে মৃত্যু হয় তার। হত্যাকাণ্ডের ৪৫ দিন পর ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন দেয় গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগ। সেখানে শহীদুলের মৃত্যুর কারণ হিসেবে এসব কথা উল্লেখ করা ছিলো।

ধারণা করা হচ্ছে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করে তাকে হত্যা করা হয়েছিল।

শহীদুল ইসলাম হত্যার ঘটনায় সমবেদনা জানাতে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বাংলাদেশ গার্মেন্ট অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গিয়েছিলেন।

ওই হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমবিষয়ক দপ্তর এক টুইট বার্তায় ওই হত্যার স্বাধীন ও পূর্ণ তদন্ত এবং শ্রমিক নেতাদের সুরক্ষা, মানবাধিকার ও শ্রম অধিকার নিশ্চিত করার আহ্বান জানায়।

১১ বছর আগে এই সংগঠনেরই নেতা আমিনুল ইসলাম খুন হয়েছিলেন। ২০১২ সালের ৪ এপ্রিল আশুলিয়া থেকে নিখোঁজ হওয়ার পরদিন তার ক্ষতবিক্ষত লাশ পাওয়া গিয়েছিল টাঙ্গাইলের ঘাটাইল থানা এলাকায়। তখনও বিদেশি ক্রেতা জোট এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার দাবি করে সরকারকে চিঠি দিয়েছিল। ওই হত্যা মামলায় একজনের ফাঁসি হয়েছে।

২০১৯ সালের ৯ই জানুয়ারি সাভারে সুমন মিয়া নামের এক পোশাক শ্রমিককে গুলি করে হত্যা করেছিলো পুলিশ। চিকিৎসকেরা বলেছিলেন, নিহতের বুকে গুলি লেগেছিলো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     More News Of This Category