বর্ষবরণ উৎসবের নাম পরিবর্তন নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আজহারুল ইসলাম এক বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, “এটি নাম পরিবর্তন নয়, বরং একটি পুনরুদ্ধার।” ১৯৮৯ সালে প্রথমবারের মতো ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’ নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এই বর্ষবরণ উৎসবের সূচনা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে, ১৯৯৫ সালে, নামটি পরিবর্তিত হয়ে ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ হয়ে যায়। এখন, নতুন নামকরণ করা হয়েছে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই তথ্য তুলে ধরেন। অধ্যাপক আজহারুল ইসলাম বলেন, “১৯৮৯ সালে বর্ষবরণ উৎসবের এই চর্চা শুরু হয়েছিল, আমরা তখন ছাত্র ছিলাম। পরে নাম পরিবর্তন হয়ে ‘মঙ্গল’ শোভাযাত্রা হয়।” তিনি আরও বলেন, “১৯৮৯ সালের আয়োজনে যে স্বতস্ফূর্ততা ছিল, আর পরবর্তী সময়ে কীভাবে তা পরিবর্তিত হয়েছে, তা আপনারা জানেন। তাই আমরা এটিকে পরিবর্তন বলছি না, বরং পুনরুদ্ধার বলছি।” কোনো পক্ষের চাপের কারণে এই পরিবর্তন হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ডিন বলেন, “চাপের প্রসঙ্গটি আমরা এভাবে মূল্যায়ন করতে চাই না। প্রতি বছর বর্ষবরণ নিয়ে নানা বিতর্ক সৃষ্টি হয়। আমাদের এই ভূখণ্ডের প্রতিটি শ্রেণি-পেশার মানুষ কীভাবে দাঁড়াবে, সেটাই আসলে বিবেচ্য।” তিনি বলেন, “মঙ্গল শব্দের কোনো শব্দগত ত্রুটি আমি দেখছি না। তবে ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা এই শব্দটিকে এমনভাবে ব্যবহার করেছে যে সমাজে এর প্রতি একটি নেতিবাচক অনুভূতি তৈরি হয়েছে। আমরা অতীতে ফিরে যেতে চাই, যেখানে সবার স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল, যেখানে সংস্কৃতির মধ্যে কোনো রাজনৈতিক আগ্রাসন ছিল না।” সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মামুন আহমেদ, অধ্যাপক এ এ এম কাওসার হাসান, প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমদসহ বর্ষবরণ উদযাপন সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটি এবং বিভিন্ন উপ-কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।