ঢাকা-১৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ইলিয়াস মোল্লার ছত্রচ্ছায়ায় রাজধানীর পল্লবী এলাকায় মন্দির দখলসহ সেবায়েতদের মারধর এমনি লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে।
ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, ইলিয়াস মোল্লার লোকজন সেবায়েতদের মারধর করে মিরপুর পল্লবীর ‘শ্রী শ্রী গৌর নিতাই মন্দির’ দখল করেছেন। তাই অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তারা।
শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানায় শ্রী শ্রী গৌর নিতাই মন্দির ও বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ফোরাম।
লিখিত বক্তব্যে মন্দিরের সেবায়েত ড. সুবেন্দু তালুকদার বলেন, ‘সাবেক সংসদ সদস্য ইলিয়াস মোল্লার ছত্রচ্ছায়ায় সুধীর গং আমাদের শ্রী শ্রী গৌর নিতাই মন্দির দখল, আমাকে ও আমার সঙ্গে থাকা মন্দিরের ভক্তদের অমানবিক নির্যাতন করে সন্ত্রাসী কায়দায়, অন্যায়ভাবে ২০১৮ সালে মন্দির থেকে বের করে দেয়। নানাবিধ মিথ্যা মামলা দিয়েও হয়রানি করা হয়।
আমি সরকারের বিভিন্ন দপ্তর- থানা, জেলা প্রশাসক, আর্মি দপ্তরসহ সর্বোচ্চ জায়গায় যোগাযোগ করেও স্থানীয় সংসদ সদস্যের প্রভাবে মন্দিরটি ফিরে পেতে ব্যর্থ হয়েছি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমার প্রাণনাশের হুমকি থাকায় আমি কিছু সরকারি দপ্তরে চিঠিপত্র দেওয়াসহ সামান্য কিছু আইনিব্যবস্থা গ্রহণ করতে পেরেছি।
তিনি আরও বলেন, ‘২০১৩ সালের ২৫ মে বিগত মিরপুরের ক্যান্টনমেন্টে ১২ নম্বর চাকুলী মন্দির ও পূজা কমিটি মন্দিরটি পরিচালনায় ব্যর্থ হয়ে মন্দিরটি যথাযথ উন্নয়ন এবং সুস্থ পরিচালনার জন্য অধ্যাপক ড. নির্মল কান্তি মিত্র, মিরপুর ডিওএইচএস সংলগ্ন অবসরপ্রাপ্ত হিন্দু সেনা কর্মকর্তা ও জনসাধারণের বৈঠকের মাধ্যমে সরকারি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে দালিলিকভাবে আমাদের পরিচালনা কমিটির নিকট মন্দিরটি হস্তান্তর করে।
হস্তান্তরের পর জানা যায়, মন্দিরের যে জায়গাটা আমাদের হস্তান্তর করা হয়েছে সেই দাগ নম্বরের জমি এটি নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরবর্তী সময়ে জমিসংক্রান্ত ঝামেলা মিটিয়ে মূল মন্দির নির্মাণ শুরু হওয়ার পর থেকে স্থানীয় সংসদ সদস্য ইলিয়াস মোল্লার সহযোগিতায় সুধীর গং কর্তৃক মন্দির দখলের অপচেষ্টা শুরু করে।
এদিকে ২০১৮ সালে ইলিয়াস মোল্লা নিজে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সুধীর গংয়ের মাধ্যমে পূজার নামে আমাকে হস্তান্তর করা অস্থায়ী মন্দিরে আমাকে ও আমার ভক্তদের মারধর করে এবং মন্দিরের প্রায় ১০ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।’
সংবাদ সম্মেলনে সাবেক সংসদ সদস্য ইলিয়াস মোল্লাসহ সুধীর গংদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করে সাধারণ সব ভক্তের জন্য মন্দির উন্মুক্ত করা ও সবার প্রার্থনার সুযোগ করে দেওয়ার দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতন পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক হীরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস, ঢাকা প্রনবমঠ অধ্যক্ষ শ্রী গণেশ মহারাজ, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কালীপদ মজুমদার, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মানিক চন্দ্র সরকার, হিন্দু যুব ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সুমন গোস্বামী পুলক, হিন্দু ছাত্র ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি অজয় কুমার প্রমুখ।