ঢাকা, ১ জানুয়ারি ২০২৫:
আজ ঢাকার পূর্বাচলের বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে ২৯তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা (ডিআইটিএফ) ২০২৫-এর শুভ উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি আসবাবকে বর্ষপণ্য ঘোষণা করে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এ সময় বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আবদুর রহিম খান উপস্থিত ছিলেন।
ডিআইটিএফ, যা ১৯৯৫ সাল থেকে নিয়মিতভাবে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে, দেশীয় পণ্য প্রচার ও বিপণনের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক দৃষ্টি আকর্ষণের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে পরিচিত। এ বছর চতুর্থবারের মতো মেলা পূর্বাচলের এই আধুনিক প্রদর্শনী কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
এবারের মেলায় রয়েছে ৩৬২টি স্টল ও প্যাভিলিয়ন। এর মধ্যে ৩৫১টি দেশীয় প্রতিষ্ঠানের এবং বাকি ১১টি বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর। অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে ভারত, পাকিস্তান, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, হংকং ও মালয়েশিয়া। মেলা সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে, এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিন মেলা খোলা থাকবে রাত ১০টা পর্যন্ত। প্রবেশমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ৫০ টাকা ও শিশুদের জন্য ২৫ টাকা। বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা বিনামূল্যে মেলায় প্রবেশ করতে পারবেন।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মেলার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, “নতুন নতুন পণ্য উদ্ভাবন, রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণ এবং পণ্য বহুমুখীকরণের মাধ্যমে আমাদের অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হচ্ছে। মেলার মতো উদ্যোগগুলো রপ্তানি বাণিজ্যের প্রসারে এবং দেশের দারিদ্র্য কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।”
তিনি আরও বলেন, “মেলা আমাদের সৃষ্টিশীলতার উত্সাহ দেয়। বিশেষত তরুণ প্রজন্মকে নতুন ধারণা নিয়ে কাজ করার সুযোগ করে দেয়। তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য মেলায় একটি বিশেষ অংশ বরাদ্দ করা উচিত, যেখানে তারা তাদের উদ্ভাবন ও দক্ষতা প্রদর্শন করতে পারবে।”
অধ্যাপক ইউনূস উল্লেখ করেন, দেশের তরুণেরা বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করছেন, তবে তারা যথাযথ স্বীকৃতি পাচ্ছেন না। তিনি মেলার মাধ্যমে উপজেলাভিত্তিক প্রতিযোগিতার আয়োজনের প্রস্তাব করেন, যেখানে বিজয়ীদের মেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেওয়া হবে এবং তাদের যাবতীয় খরচ সরকার বহন করবে।
প্রধান উপদেষ্টা মেলার প্রতি সাধারণ মানুষের আগ্রহ ও আনন্দের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “বাণিজ্য মেলা শুধু কেনাকাটার জায়গা নয়, এটি মানুষের মননকে নতুনভাবে উদ্ভাবনের প্রেরণা দেয়।”
ডিআইটিএফ ২০২৫ মাসব্যাপী চলবে, যা দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ব্যবসায়িক যোগাযোগ, পণ্যের বাজার সম্প্রসারণ এবং নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে আয়োজকরা আশাবাদী।