মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫, ০৮:৩৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ আবু সাঈদ হত্যা : ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল চীন সফর শেষে দেশে ফিরলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর চীন সফর শেষে দেশে ফিরলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকার ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ উদযাপনের জন্য জেলা পর্যায়ে বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করেছে এনবিআরে প্রবেশ ও বের হওয়া নিষিদ্ধ, আন্দোলনকারীদের অবস্থান প্রকাশ ইরানে যুদ্ধের পরিস্থিতিতে ২৫০ বাংলাদেশির দেশে ফেরার জন্য নিবন্ধন: সরকার প্রস্তুতি গ্রহণ করছে হাসিনার পক্ষে আইনজীবী নিয়োগ করলো ট্রাইব্যুনাল মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতির কাজ পুরোদমে এগিয়ে নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি) হজপালন শেষে দেশে ফিরলেন ৪০ হাজার ৫২০ জন হাজি

যৌন হয়রানিসহ নানা অভিযোগে ইবি শিক্ষক চাকরিচ্যুত

bornomalanews
  • Update Time : সোমবার, ৩০ জুন, ২০২৫
  • ২ Time View

কথার অবাধ্য হলে নম্বর কমিয়ে দেওয়া, অশ্লীল গালিগালাজ, যৌন হয়রানি ও ছাত্রদের সমকামিতায় বাধ্য করাসহ নানা অভিযোগে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হাফিজুল ইসলামকে চাকরি থেকে অপসারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

সোমবার (৩০ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মনজুরুল হক স্বাক্ষরিত এক চিঠি সূত্রে তথ্যটি জানা গেছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, গত ৩১ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৬৮তম (সাধারণ) সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার ০৭ নং সিদ্ধান্ত মোতাবেক পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী তদন্তের আলোকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও শৃঙ্খলার স্বার্থে ওই শিক্ষকের এহেন কর্মকাণ্ড ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী দক্ষতা ও শৃঙ্খলা বিধির চরম পরিপন্থি। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী দক্ষতা ও শৃঙ্খলা বিধির ৪(১) (এফ) ধারা মোতাবেক তাকে ৩১ মে থেকে চাকরি হতে অপসারণ করার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ।

এর আগে,২০২৩ সালের ২২ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৬৬তম সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. হাফিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে উক্ত বিভাগের শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে ভিসি কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পেশ করা হয়। রিপোর্ট অনুযায়ী সিন্ডিকেট সভার ৪৪নং সিদ্ধান্ত মোতাবেক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী দক্ষতা ও শৃঙ্খলা বিধির (৪) আই (বি) ও (ই) ধারা মোতাবেক তাকে বাৎসরিক ০১ (এক) টি ইনক্রিমেন্ট/খাপ বাতিল করা হয়। পাশাপাশি তাকে ২২ ডিসেম্বর থেকে এক বছরের বাধ্যতামূলক ছুটি প্রদান করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে এই সিদ্ধান্ত মানেনি শিক্ষার্থীরা। সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করে শিক্ষার্থীরা ফের আন্দোলন শুরু করেন এবং তাকে স্থায়ীভাবে চাকরি থেকে অপসারণের দাবি জানান। পরে ২০২৪ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ২৬৭তম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিষয়টি পুনরায় ব্যাপক তদন্তের জন্য নতুন করে তদন্ত কমিটি গঠন করে কর্তৃপক্ষ। সেই তদন্ত কমিটির রিপোর্টের আলোকেই ওই শিক্ষককে চাকরি থেকে অপসারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ওই বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ ক্লাবের সভাপতি বোরহান উদ্দীন বলেন, এর আগে প্রশাসন প্রহসনমূলক সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তবে আমরা তার স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিতে অটল ছিলাম। প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন নির্যাতন থেকে রক্ষা পেলো। এই সিদ্ধান্তে আমরা অত্যন্ত খুশি, যা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। প্রশাসনের কাছে আমার দাবি, হাফিজকে তো আমাদের দাবির প্রেক্ষিতে বহিষ্কার করলো। ক্যাম্পাসে এমন অনেক হাফিজ আছে। আমরা চাইবো প্রশাসন সেগুলো তদন্ত করে খুঁজে বের করে নিজেরা শাস্তির আওতায় নিয়ে আসবে।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৭ অক্টোবর বিভিন্ন অভিযোগ তুলে শিক্ষক হাফিজুল ইসলামের অপসারণ দাবিতে বিক্ষোভ করে বিভাগের শিক্ষার্থীরা। পরে শিক্ষার্থীরা লিখিতভাবে উপাচার্যের কাছে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অন্তত ২৭টি অভিযোগ তুলে ধরেন এবং মৌখিকভাবে আরও বিভিন্ন অভিযোগ ও ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তাকে অপসারণের দাবি জানান। অভিযোগ তদন্তে ৮ অক্টোবর পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে কর্তৃপক্ষ। তদন্ত কমিটির কাছেও অভিযোগগুলো জমা দেয় শিক্ষার্থীরা। তদন্ত কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত অভিযুক্ত শিক্ষককে বিভাগের একাডেমিকসহ সকল প্রকার কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা দেয় কর্তৃপক্ষ। এদিকে ওই শিক্ষককে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের দাবিতে কয়েক দফায় আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলন চলাকালে শিক্ষক হাফিজুল ইসলামের ছবি সম্বলিত কুশপুত্তলিকা হাতে পুরো ক্যাম্পাসে মিছিল করেন তারা। মিছিল শেষে তারা ক্যাম্পাসের ফটকের সঙ্গে কুশপুত্তলিকা ঝুলিয়ে তাতে জুতা ও থুতু নিক্ষেপ করেন।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ওই শিক্ষক যৌন হয়রানিসহ ছাত্র-ছাত্রীদেরকে শারীরিক এবং মানসিকভাবে হেনস্থা করেন এবং ব্যক্তিগত স্বার্থ চারিতার্থ করার জন্য ব্যবহার করেন। এছাড়া ছাত্রদের জোরপূর্বক সমকামিতায় বাধ্য করা, মেয়ে শিক্ষার্থীদের পোশাক, পরিবার ও চেহারা নিয়ে প্রতিনিয়ত বাজে মন্তব্য করেন এবং মেয়েদের নর্তকী, বাজারের মেয়েসহ অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন। এছাড়াও এটেনডেন্সের বিনিময়ে ছাত্রলীগের মিছিলে পাঠানো, কথার অবাধ্য হলে ইন্টারনাল নম্বর কমিয়ে দেওয়া, শিক্ষার্থীদের ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে মারার হুমকি, দাড়ি থাকলে শিবির ট্যাগ দিয়ে হেনস্থা, ক্লাসের শিডিউল দিয়ে ডেকে এনে জোরপূর্বক তার জন্মদিন পালন করানোর অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2025 bornomalanews24.com
themesba-lates1749691102