রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ীতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে ঘটে যাওয়া বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় সর্বশেষ খবর অনুযায়ী ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে এক শিক্ষার্থীসহ কয়েকজন শিশু শিক্ষার্থীকে তাদের নিজ নিজ গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়েছে। এ সময় স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে আশপাশের পরিবেশ। নিহত ফাতেমা আক্তার আনিশার (৯) ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন ছিল। সে মাইলস্টোনের বাংলা ভার্সনের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী ছিল। গতকাল ভোরে বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার কুনিয়া গ্রামের বাড়িতে আনিশার লাশবাহী ফ্রিজিং ভ্যানটি এসে পৌঁছালে তার স্বজনরা আহাজারি করতে থাকেন। দুর্ঘটনার পর তার বাবা কুয়েত থেকে দেশে ফিরে জানতে পারেন তার মেয়ে আর নেই। আনিশার মামা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আমার ভাগনির ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন ছিল।” অন্যদিকে, রজনী ইসলামের (৪৫) দাফন সম্পন্ন হয়েছে। তিনি মাইলস্টোন স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী ঝুমঝুমের মা। দুর্ঘটনার পর মেয়েকে খুঁজতে গিয়ে আহত হন তিনি এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। সায়ান ইউসুফ (১৪) ঘটনার দিন গভীর রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। তার বাবা মাইলস্টোন কলেজের রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। একই ঘটনায় আফনান ফায়াজও মারা যায়, যিনি সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ছিল। আবদুল্লাহ ছামীম (১৩) এবং টাঙ্গাইলের দুই শিক্ষার্থী মেহেনাজ আক্তার হুমাইরা (৮) ও তানবীর আহমেদ (১৪) এর দাফনও সম্পন্ন হয়েছে। মাইলস্টোনের শিক্ষিকা মাসুকা বেগম (নিপু) মৃত্যুর আগে তার শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে আপন বোনের বাড়ির এলাকার কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন। বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলায় মাইলস্টোন স্কুলের ছাত্র মোহাম্মদ সামীউল করিম সামীরকে (১১) তার নানার পাশে দাফন করা হয়েছে। গাজীপুরে, সায়মার বাবা-মা তাদের একমাত্র মেয়েকে হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। সায়মার বাবা বলেন, “আমার মেয়ের স্বপ্ন ছিল সে ডাক্তার হবে। এখন তো সব শেষ।” এই দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের সদস্যদের শোক ও আহাজারি পুরো দেশকে শোকাহত করেছে।