চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর সারা দেশে বিস্ময়ের সৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সচিবালয়ে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরার স্পষ্টভাবে বলেন, এতদিন ফল ভালো দেখাতে গিয়ে শিক্ষার প্রকৃত সংকট আড়াল করা হয়েছিল, এবার সেই সংকট নগ্নভাবে প্রকাশ পেয়েছে। তিনি জানান, এই ফলের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় কোনোভাবেই দায়িত্ব এড়াতে পারে না। শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, এবারের ফলাফলকে আত্মসমালোচনার সুযোগ হিসেবে দেখছে সরকার। কেন ফলাফল খারাপ হয়েছে, তা পর্যালোচনা করে খুঁজে বের করা হবে এবং শিক্ষার্থীদের প্রকৃত মঙ্গল বিবেচনায় তাদের প্রাপ্য নম্বরই দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের আন্দোলন প্রসঙ্গেও কথা বলেন অধ্যাপক আবরার। তিনি বলেন, সরকার শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধির দাবি সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে। এ ছাড়া রাজধানীর সাত কলেজ বিষয়ে আইনের খসড়া তৈরি করে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে বলে জানান তিনি। এদিকে, বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. খন্দোকার এহসানুল কবির বলেন, এবারের এইচএসসি পরীক্ষার ফলে দেশের শিক্ষাব্যবস্থার বাস্তব চিত্র উঠে এসেছে। শিক্ষার্থীরা এখন পড়াশোনা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে, যা অভিভাবকদের জন্যও চিন্তার বিষয়। তিনি জানান, এবারের পরীক্ষায় সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী ইংরেজি ও আইসিটি বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছে। বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ইংরেজিতে পাশের হার নেমে এসেছে ৭৭ শতাংশ থেকে ৫৮ শতাংশে, যা গত দুই দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন। প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় দেশের ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডসহ মাদ্রাসা ও কারিগরি বোর্ডের চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল একযোগে প্রকাশিত হয়। এ বছর এইচএসসিতে গড় পাশের হার ৫৮ দশমিক ৮৩ শতাংশ, যা সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে কম। এই ফলাফল দেশের শিক্ষাব্যবস্থার বর্তমান অবস্থা ও সংকট নিয়ে নতুন করে ভাবনার দরজা খুলে দিয়েছে। এখন দেখার বিষয়, সরকার ও সংশ্লিষ্ট মহল এই সংকট মোকাবেলায় কী পদক্ষেপ নেয়।