সাম্প্রতিক সময়ে দেশের নানা স্থানে একের পর এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র। এসব ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত এবং কারণ অনুসন্ধানে স্বরাষ্ট্র সচিব নাসিমুল গনির নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি কোর কমিটি গঠন করেছে সরকার। রোববার সন্ধ্যায় সচিবালয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সমন্বয় কমিটির জরুরি বৈঠক শেষে এ তথ্য জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম। তিনি জানান, প্রয়োজনে এই কমিটির সদস্য সংখ্যা ১২ থেকে ১৪ জনে বাড়ানো হতে পারে। আগামী ৫ নভেম্বরের মধ্যে কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডে নাশকতার কোনো যোগসূত্র রয়েছে কি না, কিংবা আগুন আরও দ্রুত নির্বাপন করা যেত কি না, এসব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে তদন্তের পর। একইসঙ্গে সরকারি সক্ষমতা ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের দায়-দায়িত্বও খতিয়ে দেখা হবে। বৈঠকে দেশের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা ও সীমাবদ্ধতা নিয়েও আলোচনা হয়। উপদেষ্টা বলেন, সরকারের কারিগরি ঘাটতির বিষয়টি স্পষ্ট। উদাহরণ হিসেবে তিনি জানান, সিভিল এভিয়েশনে ফায়ার সেফটি ব্যবস্থা থাকলেও কার্যকর নির্বাপন সক্ষমতা ছিল না। উল্লেখ্য, গত শনিবার দুপুরে রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো সেকশনে ভয়াবহ আগুন লাগে। প্রায় সাত ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও, বিমান ওঠানামা বন্ধ হয়ে যায় এবং ২৭ ঘণ্টা পর ফায়ার সার্ভিস পুরোপুরি নির্বাপনের ঘোষণা দেয়। এতে শত শত কোটি টাকার ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। এদিকে, এর আগের দিন চট্টগ্রামের ইপিজেড এলাকার একটি কারখানায় দাউ দাউ করে আগুন লাগে, যা টানা ১৭ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে আসে। একই রাতে টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে একটি সূতার মিলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। শুধু তাই নয়, ১৪ অক্টোবর মিরপুরের রূপনগরের একটি কেমিক্যাল গোডাউন ও পোশাক কারখানায় ভয়াবহ আগুনে ১৬ জনের মৃত্যু হয়। বারবার অগ্নিকাণ্ডের এসব ঘটনায় জনমনে আতঙ্ক বাড়ছে। অপর্যাপ্ত প্রযুক্তিগত সক্ষমতা ও দুর্বলতা চিহ্নিত করে দ্রুত সমাধানের দাবি তুলছেন সংশ্লিষ্টরা। তদন্ত রিপোর্টের সুপারিশে ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রত্যাশা করছে দেশবাসী।