প্রতি বছরের মতো এবারও বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী মুসলিম ব্যক্তিদের তালিকা প্রকাশ করেছে জর্ডানভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘দ্য রয়েল ইসলামিক স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ সেন্টার (আরআইএসএসসি)’। ‘দ্য মুসলিম ৫০০: ৫০০ ইনফ্লুয়েনশিয়াল মুসলিমস ২০২৬’ শিরোনামের তালিকায় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও শান্তিতে নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ৫০তম অবস্থানে রয়েছেন। গত বছরের মতো এবারও তিনি একই অবস্থান ধরে রেখেছেন। প্রকাশিত তালিকায় শীর্ষস্থানে রয়েছেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানি। দ্বিতীয় স্থানে পাকিস্তানের প্রখ্যাত ইসলামি চিন্তাবিদ মুফতি তাকি উসমানি এবং তৃতীয় স্থানে ইয়েমেনি সুফি আলেম শেখ হাবিব উমর বিন হাফিজ। শীর্ষ দশে আরও রয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি, জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ দ্বিতীয়, আল-আজহারের গ্র্যান্ড শেখ ড. আহমদ আল-তায়্যিব, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান, সৌদি বাদশাহ সালমান, সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ ও মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। তালিকার শীর্ষ ৫০ জনের মধ্যে রয়েছেন বিভিন্ন দেশের নেতা, চিন্তাবিদ, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, এমনকি ক্রীড়া ও সংস্কৃতি অঙ্গনের পরিচিত মুখ। উল্লেখযোগ্যদের মধ্যে আছেন ইরাকের আয়াতুল্লাহ আলী হুসেইন আল-সিস্তানি, সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান, ভারতের মাওলানা মাহমুদ মাদানী, যুক্তরাষ্ট্রের শেখ হামজা ইউসুফ, ফুটবলার মোহাম্মদ সালাহ ও তালিবান নেতা মোল্লা হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা। তালিকার অন্যতম আকর্ষণ হিসেবে উঠে এসেছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. ইউনূসের নাম। সম্প্রতি ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তিনি এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ড. ইউনূস তার কর্মজীবনে দারিদ্র্য দূরীকরণ, ক্ষুদ্র ঋণ ও নারীর ক্ষমতায়নসহ নানা সামাজিক উদ্যোগের জন্য বিশ্বজুড়ে স্বীকৃতি পেয়েছেন। ২০০৬ সালে গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তার অবদানের জন্য তিনি নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হন। তার নেতৃত্বে ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রম বাংলাদেশের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পর্যায়েও দারিদ্র্য বিমোচনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে। তালিকাটি প্রস্তুত করতে যুক্তরাষ্ট্রের জর্জটাউন ইউনিভার্সিটির প্রিন্স আলওয়ালিদ বিন তালাল সেন্টার ফর মুসলিম-ক্রিশ্চিয়ান আন্ডারস্ট্যান্ডিংয়ের সহায়তা নেওয়া হয়েছে। ধর্মীয়, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও মানবিক ক্ষেত্রে বিশ্ব মুসলিম সমাজে যাদের অবদান উল্লেখযোগ্য, তাদেরকে এই তালিকায় স্থান দেওয়া হয়। ড. ইউনূসের আন্তর্জাতিক খ্যাতি ও সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ড তার অবস্থানকে আরও সুদৃঢ় করেছে।