রিপোর্ট: আন্তর্জাতিক বাজারে ডলারের মান চাঙা থাকায় এবং যুক্তরাষ্ট্রে ডিসেম্বর মাসে সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা কমে যাওয়ায় মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) স্বর্ণের দাম আবারও প্রতি আউন্স ৪ হাজার ডলারের নিচে নেমে এসেছে। একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য উত্তেজনা কিছুটা প্রশমিত হওয়ায় স্বর্ণের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহও কমেছে। মঙ্গলবার সকাল ৬টা ২৫ মিনিট পর্যন্ত আন্তর্জাতিক বাজারে স্পট গোল্ডের দাম দশমিক ৮ শতাংশ কমে দাঁড়ায় প্রতি আউন্স ৩ হাজার ৯৭০ দশমিক ৩৯ ডলারে। একই সময়ে ডিসেম্বরে সরবরাহযোগ্য যুক্তরাষ্ট্রের গোল্ড ফিউচারও প্রায় ১ শতাংশ কমে ৩ হাজার ৯৭৯ দশমিক ৩০ ডলারে লেনদেন হয়। গত তিন মাসের মধ্যে ডলারের মান এখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে অবস্থান করছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের (ফেড) সুদের হার কমানো নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। ফেড সম্প্রতি দ্বিতীয়বারের মতো সুদের হার কমালেও, পরবর্তী কমানোর বিষয়ে পরিষ্কার বার্তা পাওয়া যায়নি। ফেড চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল জানিয়েছেন, আবারও হার কমানো হবে কি না, সে বিষয়ে এখনই নিশ্চিত কিছু বলা যাচ্ছে না। ফলে বিনিয়োগকারীরা ডিসেম্বরে হার কমার সম্ভাবনা ৬৫ শতাংশ হিসেবে দেখছেন, যা পাওয়েলের বক্তব্যের আগে ছিল ৯০ শতাংশের বেশি। কে–সিএম ট্রেডের প্রধান বিশ্লেষক টিম ওয়াটারার বলেন, ডলারের শক্তিশালী অবস্থান স্বর্ণের বাজারের জন্য এখন বড় চ্যালেঞ্জ। বিনিয়োগকারীরা বছরের শেষ দিকে সুদের হার কমার সম্ভাবনা আবারও গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছেন। তিনি আরও বলেন, সপ্তাহের মাঝামাঝি যুক্তরাষ্ট্রের এডিপি কর্মসংস্থান তথ্য ও আইএসএম শিল্প সূচক প্রকাশিত হলে স্বর্ণের দামের ওপর বড় ধরনের প্রভাব পড়তে পারে। বিশেষ করে, এডিপি রিপোর্ট দুর্বল হলে স্বর্ণ আবারও ঊর্ধ্বমুখী হতে পারে। এ বছর এখন পর্যন্ত স্বর্ণের দাম ৫৩ শতাংশ বেড়েছে। যদিও অক্টোবরের ২০ তারিখে সর্বোচ্চ দামে পৌঁছানোর পর থেকে এটি ৮ শতাংশ কমেছে। স্বর্ণের পাশাপাশি রুপার দামও ১.৩ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে প্রতি আউন্স ৪৭.৪৭ ডলারে, প্লাটিনাম ১.১ শতাংশ কমে ১,৫৪৮.১৫ ডলারে এবং প্যালাডিয়াম ২.৮ শতাংশ কমে ১,৪০৪.৬৮ ডলারে নেমে এসেছে। বিশ্লেষকদের মতে, সরকারিভাবে অর্থনৈতিক তথ্য প্রকাশে বিলম্ব এবং ফেড কর্মকর্তাদের ভিন্নমত পরিস্থিতিকে আরও অনিশ্চিত করে তুলেছে। সাধারণত, সুদের হার কমে গেলে এবং অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা বাড়লে স্বর্ণের চাহিদা বাড়ে। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীরা অপেক্ষার মনোভাব নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক তথ্যের দিকে তাকিয়ে আছেন।