আজ ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সময় : রাত ১১:০৮

বার : শুক্রবার

ঋতু : গ্রীষ্মকাল

‘ঐকমত্যের ভিত্তিতে আন্দোলনের কর্মসূচি ঠিক করা হবে’

‘ঐকমত্যের ভিত্তিতে আন্দোলনের কর্মসূচি ঠিক করা হবে’

বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতেই সরকার হটানোর আন্দোলনের কর্মসূচি ঠিক করা হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, ‘আজকের আলোচনার বিষয়বস্তু এই সরকারের অধীনে নির্বাচন না। এর সঙ্গে আমরাও একমত প্রকাশ করছি। এই কথার সঙ্গে আরও যুক্ত করতে চাই— আর এই সরকার না। বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন তো না-ই। দেশের যে পরিস্থিতি যে অবস্থা, তাতে এখন সময় এসেছে সরকারকে না বলা।’

বুধবার (২৭ এপ্রিল) রাজারবাগের হোয়াইট হাউস রেস্টুরেন্টে নাগরিক ঐক্যের এক ইফতারপূর্ব আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য একথা জানান। নাগরিক ঐক্যের আয়োজনে ‘এই সরকারের অধীনে নির্বাচনকে না বলুন’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিএনপি, গণফোরাম, জেএসডি, গণসংহতি আন্দোলনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশ নেন।

ইফতারে বিএনপির আমীর খসুর মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, আবদুল আউয়াল মিন্টু, শ্যামা ওবায়েদ, জহির উদ্দিন স্বপনসহ ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা অংশ নেন।  তবে জামায়াতে ইসলামীর কাউকে ইফতারে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।

খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘এই সরকারকে বিদায় দেওয়ারর জন্য আসুন, আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হই। দেশের মানুষের যে ঐক্যবদ্ধ আকাঙ্ক্ষা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করা, দেশের মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনা এবং এদেশের মানুষের মালিকানা তাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া– এর জন্য সব গণতান্ত্রিক জাতীয়তাবাদী দেশপ্রেমিক শক্তি, রাজনৈতিক শক্তি, দল ও ব্যক্তিকে আমরা আহ্বান জানাবো, এই সরকারের হাত থেকে এদেশের জনগণকে মুক্ত করি। সেজন্য আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন-সংগ্রামের জন্য যে কর্মসূচি প্রয়োজন হবে, তা আলোচনার মাধ্যমে আমরা সিদ্ধান্ত নেই।’

জেএসডির সভাপতি আসম আবদুর রব বলেন, ‘একাত্তর সালের মুক্তিযুদ্ধে যে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি হয়েছিল, আওয়ামী লীগ তাকে হত্যা করেছে। আজকে ৫০ বছরেও দেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হয়নি।  একটা কথা— পরিষ্কার আমরা এখানে যারা উপস্থিত আছি, কেউ এই সরকারের অধীনে নির্বাচন করবো না। এই প্রশ্নে কোনও দ্বিমত নেই।’

‘আমাদের কথা স্পষ্ট— এই সরকারের অধীনে কোনও নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। সেজন্য এদেরকে হটাতে আন্দোলনের কোনও বিকল্প পথ নেই। তবে এই সরকারকে বিদায়ের পর কোন সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে, সেটা আমাদের আগেই ঠিক করতে হবে। সেই সরকারটি অবশ্যই এমন সরকার হতে হবে, যারা নিরপেক্ষ ও অবাধ একটি নির্বাচন করতে পারবে। সেজন্যই জেএসডি মনে করে, একটি জাতীয় সরকারের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। কারণ, বর্তমান সরকার যেভাবে প্রশাসনকে দলীয়করণ করেছে, তাতে  সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। সেজন্য একটা জাতীয় সরকার দরকার হবে।’

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘যারা যারা কথা বলেছেন সবার কথার মধ্যে এই প্রত্যয় ব্যক্ত হয়েছে যে, এই সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে না। আমরা যাবো না। এই সরকার চলে যাওয়ার পরে যে সরকার হবে, সেটা তো নির্বাচিত সরকার নয়।’

‘এই সরকার কেমন হবে। কেউ জাতীয় সরকার বলছেন, কেউ তত্ত্বাবধায়ক সরকার বলছেন, কেউ বলছেন তদারকির সরকার। এ থেকে সরকার পক্ষের মিডিয়াগুলো মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াবার চেষ্টা করছে যে, ওরা পরের সরকারের ব্যাপারে একমত নয়, মতপার্থক্য আছে, ওদের ঐক্য হবে না। তাদের জন্য আমরা একটা মেসেজ দিতে চাই- আমরা যে নামেই ডাকি না কেন, আমরা একটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার চাই। সেই সরকার পরবর্তী নির্বাচনকে সুগম, স্বচ্ছ, গ্রহণযোগ্য করে তুলতে পারে।’

মাহমুদুর রহমান মান্নার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, গণফোরামের মোস্তফা মোহসিন মন্টু,  বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি,  গণঅধিকার পরিষদের ড. রেজা কিবরিয়া,  এলডিপির মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ, এলডিপির আরেক অংশের মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, জেএসডির শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবুল, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাগপার খন্দকার লুৎফুর রহমান, বিকল্পধারার নুরুল আমিন ব্যাপারী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     More News Of This Category