আজ ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সময় : সকাল ৬:৪২

বার : শুক্রবার

ঋতু : গ্রীষ্মকাল

ফ্যাটি লিভার রোগ নিয়ে যা কিছু জানা জরুরি

ফ্যাটি লিভার রোগ নিয়ে যা কিছু জানা জরুরি

লিভার শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। একটি সুস্থ লিভারে অল্প পরিমাণে চর্বি জমা থাকতে পারে, সেটা স্বাভাবিক। কিন্তু লিভারে অতিরিক্ত চর্বি জমে গেলে তাকে বলে ফ্যাটি লিভার ডিজিজ। এই রোগের কারণ, ঝুঁকি ও প্রতিরোধের উপায় জানাচ্ছেন বাংলাদেশ মাল্টিকেয়ার হাসপাতাল ও ইবনেসিনা ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড কনসালটেশন সেন্টারের ক্লিনিক্যাল ডায়াটিশিয়ান ও নিউট্রিশন কনসালটেন্ট ফাতেমা সিদ্দিকী ছন্দা।

লিভার চর্বি বিপাকে সাহায্য করে। সহজভাবে বলতে গেলে চর্বিকে শক্তিতে রূপান্তর করে। তাই লিভার চর্বি জমার সাধারণ স্থান।

ফ্যাটি লিভার কেন হয়?

  • অতিরিক্ত সরল শর্করা গ্রহণ করা।
  • ভাজাপোড়া খাবার বেশি পরিমাণে খাওয়া।
  • রান্নায় তেলের ব্যবহারে সজাগ না থাকা।
  • শারীরিক পরিশ্রম কম করা।
  • ওজন বেড়ে যাওয়া।
  • মদ্যপান করা।

এগুলো ছাড়াও আরও কিছু কারণে ফ্যাটি লিভারের সমস্যা দেখা দিতে পারে-

ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের কারণে।

  • কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলে।
  • রক্তস্বল্পতায় হাইপোক্সিয়া দেখা দিলে।
  • থাইরয়েড ডিজিজ থেকে।
  • সংক্রমণ রোগে যেমন হেপাটাইটিস সি।
  • বিষাক্ত পদার্থের এক্সপোজারে।

ফ্যাটি লিভার প্রতিরোধে কী করবেন?

ফ্যাটি লিভার প্রতিরোধে আমাদের কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা ভীষণ জরুরি। কারণ সবসময়ই প্রতিকারের চাইতে প্রতিরোধ জরুরি। জীবনযাপন পদ্ধতি নিয়ে খানিকটা সচেতন থাকলেই এই নীরব ঘাতক থেকে দূরে থাকা সম্ভব।

১। একজন পুষ্টিবিদের পরামর্শ অনুযায়ী খাদ্য তালিকা নির্ধারণ করে নিন।

২। খাদ্য তালিকা থেকে সরল শর্করা বাদ দিয়ে দিন।

৩। রান্নায় স্বাস্থ্যকর তেল পরিমাণ মতো ব্যবহার করুন।

৪। বাইরের ভাজাপোড়া খাবার ও কোমল পানীয় এড়িয়ে চলুন।

৫। ওজন বাড়তে দেবেন না। বাড়তি ওজন থাকলে সেটা কমিয়ে ফেলুন।

৬। প্রতিদিন অন্তত ৩০ থেকে ৪০ মিনিট হাঁটবেন।

৭। পর্যাপ্ত পানি পান করবেন এবং মৌসুমি ফল ও শাকসবজি খাবেন প্রচুর পরিমাণে। বিশেষ করে ভিটামিন এ সমৃদ্ধ ফল ও সবজি খাবেন।

৮। মদ্যপানের অভ্যাস থাকে সেটা বাদ দিন। অন্যান্য নেশাজাতীয় দ্রব্য থেকেও দূরে থাকুন।

৯। খাদ্য তালিকায় গোটাশস্যকে গুরুত্ব দিয়ে রাখুন।

১০। ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার খান প্রতিদিন।

১১। লিভারে যেন সংক্রমণ না হয় সেজন্য হেপাটাইটিস এ, সি এবং নিউমোকক্কাল ভ্যাকসিন নিন।

১২। সাদা চাল, সাদা আটা, সাদা চিনি এড়িয়ে চলুন এবং আঁশজাতীয় খাবার খাদ্য তালিকায় রাখুন।

ফ্যাটি লিভার রোগের জটিলতাগুলো কী কী?

সাধারণত এই রোগ লিভার ফাংশনে খুব একটা সমস্যার সৃষ্টি করে না। তবে অসচেতনতার কারণে এবং জীবনযাপনে পরিবর্তন না আনলে ফ্যাটি লিভারের কারণে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। কী কী জটিলতা দেখা দিতে পারে ফ্যাটি লিভার থেকে?

  • লিভার সিরোসিস।
  • লিভার ক্যানসার ও অকার্যকারিতা।
  • অ্যাসাইটিস বা পেটে তরল জমা হওয়া।
  • খাদ্যনালী ফুলে যাওয়া ও ফেটে রক্ত বের হওয়া।
  • বিভ্রান্তি ও তন্দ্রা।

সমস্যা থাকুক কিংবা না থাকুক, সবারই উচিত বছরে অন্তত একবার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া। এছাড়া পুষ্টিবিদের পরামর্শে খাদ্য গ্রহণ করাও জরুরি। এতে ফ্যাটি অ্যাসিড ডিজিজ থেকে দূরে থাকা সম্ভব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     More News Of This Category