প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তিন দেশ সফর নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘নিজের জন্য নয়, দেশের জন্য, জনগণের জন্য এই সফরে গেছেন প্রধানমন্ত্রী। মানুষের কষ্ট লাঘবে, বিশ্ব সংকটে ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। শর্ত দিয়ে নেওয়া কোনও সাহায্য নেওয়া হচ্ছে না।’
শনিবার (২৯ এপ্রিল) বিকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে রংপুর বিভাগ ও এর অন্তর্গত সকল ইউনিটের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে মতবিনিময়, সদস্য সংগ্রহ ও নবায়নের বিশেষ বৈঠকে এসব কথা বলেন তিনি।
বিদেশে গিয়ে শেখ হাসিনা ধর্না দিচ্ছেন-বিএনপির এমন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘যা তারা করে, তা আমাদের ওপর চাপাতে চায়। আমাদের নালিশ করার তো দরকার নেই। সরকারপ্রধান শেখ হাসিনাকে দাওয়াত করেছে জাপান, তিনি সেখানে গেছেন। তারা বাজেটের জন্য ৩০ বিলিয়ন ইয়েন (জাপানি মুদ্রা) অনুদান এবং ৮টা সমঝোতা স্মারক সই করেছেন।’
পদ্মা সেতু থেকে বিশ্বব্যাংক চলে গিয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক চাইছে পদ্মা সেতু থেকে সরে গিয়ে যে ভুল করেছে, তা শুধরাতে। বিশ্বব্যাংক ৫০০ মিলিয়ন ডলার দিতে রাজি হয়েছে আমাদের বাজেট সহায়তা হিসেবে। আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা হয়নি, কথাবার্তা হচ্ছে।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপির মতো দেশ বিক্রি করে সাহায্য নিচ্ছি না, অর্থনৈতিক সামর্থ্যের ওপর ভিত্তি করে নিচ্ছি। সুদৃঢ় ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘ভয় পাবেন না। কর্মসূচিতে আরও সতর্ক থাকতে হবে। আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস করতে পারে, সবাই সতর্ক থাকবেন।’
সংবিধান অনুযায়ী আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন যথাসময়ে হবে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নির্বাচনে আসবেন না, নির্বাচন করতে দেবেন না। এ দুঃসাহস দেখিয়ে লাভ নেই। সংবিধান অনুযায়ী যথাসময় নির্বাচন হবে। নির্বাচন করতে সংবিধান আছে, সেটিই পথরেখা। অন্য দেশের সুপারিশ বা পরামর্শে কেন নির্বাচন করবো? আমরা তো তাদের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করি না। তাহলে কেন তারা করবে? ইসি স্বাধীন।’
তিনি বলেন, ‘পাবলিক বিএনপির আন্দোলনে আসেনি। তাদের ভবিষ্যত অন্ধকার। বিএনপির যে রাজনীতি, বিএনপি এদেশে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি, জঙ্গিবাদ ও অপরাজনীতির পৃষ্ঠপোষক। তাদের সাথে আওয়ামী লীগের রাজনীতির তুলনা চলে না। আমরা আমাদের আদর্শে অবিচল, নীতিতে অবিচল ও বাংলাদেশ জন্মের চেতনায় অবিচল। এখান থেকে কোনও শক্তি আমাদের সরাতে পারবে না।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘দেশের রাজনীতিতে বিদেশিদের প্রতিক্রিয়া প্রভাব ফেলে। শেখ হাসিনার সাফল্য অনেকের কাছে ঈর্ষণীয়। এ দেশের রাজনীতির ইতিহাস হচ্ছে যারা আন্দোলনে জেতে তারাই নির্বাচনে জেতে। বিএনপির গণআন্দোলন মানুষ দেখতে পায়নি। জনগণের সম্পৃক্ততা ছিল না তাদের আন্দোলনে। একটা কর্মসূচিও হালে পানি পায়নি। বাস্তবে ব্যর্থ গণআন্দোলন নিয়ে পথহারা পথিকের মতো দিশেহারা বিএনপি। তারা জানে, সরকারের উন্নয়ন সমাদৃত বিশ্বে। বিভিন্ন জায়গায় নালিশ করলেও কোথা থেকে আশাব্যঞ্জক সাড়া পায়নি।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ডেড ইস্যু, আদালত হিমাগারে পাঠিয়েছেন। চালু করা সমীচীন নয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকার যারা নিয়ে আসেন কথায় কথায়, সরকারের পদত্যাগ দাবি করেন, তারা আজকে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করতে চায়। কোন গণতন্ত্র তারা চায়, জিয়াউর রহমানের? হ্যাঁ, না ভোটের গণতন্ত্র? প্রহসনমূলক নির্বাচন আমরা বিশ্বাস করি না। দেশ ধ্বংস আপনারা করেছেন। শেখ হাসিনা মেরামত করেছেন।’
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খানের সভাপতিত্বে বৈঠকে আরও বক্তব্য রাখেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কোষাধ্যক্ষ এ এইচ এম আশিকুর রহমান, দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশী, রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, উপ দফতর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।
Leave a Reply