
নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে ঢাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদক
উদ্বেগ উৎকণ্ঠা কাটিয়ে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে ঢাকা যেন জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা বেলা ২টায়। কিন্তু আগের রাত থেকেই নয়াপল্টনে সমাবেশস্থলে জড়ো হতে থাকেন মানুষ। ভোর হওয়ার আগেই নয়াপল্টন এলাকা লোকে লোকারণ্য হতে শুরু করে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে বাড়তে থাকে মিছিলের সারি। মিছিলের পর মিছিল যোগ হতে থাকে সমাবেশে।
বেলা ১২টার আগেই আরামবাগ থেকে ফরিকরাপুল হয়ে নয়াপল্টন, অপরদিকে কাকরাইল মসজিদের সামনে থেকে নাইটিঙ্গেল হয়ে নয়াপল্টন, রাজারবাগ পুলিশ লাইনের রাস্তা, মালিবাগের আবুল হোটেল থেকে মৌচাক, মালিবাগ মোড়, শান্তিনগর হয়ে নয়াপল্টন পর্যন্ত মানুষ আর মানুষ।
সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ‘একদফা’ দাবিতে বিএনপির এই সমাবেশ এখন লোকে লোকারণ্য। কোথায়ও তিল ধারণের ঠাঁই নেই। আশপাশের এলাকাগুলোতেও নেতাকর্মীদের ঢল নেমেছে।
এদিকে ৯টি বড় ট্রাকের দুইপাশের ঢাকনা খুলে একটির সঙ্গে আরেকটি একত্রিত করে তৈরি মহাসমাবেশের অস্থায়ী মঞ্চে নেতারাও আসতে শুরু করেন সকাল থেকেই। উত্তরমুখী এই মঞ্চে নেতাদের রয়েছে শতাধিক চেয়ার। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্য রাখা হয়েছে দুইটি আলাদা চেয়ার।
একদফা দাবিতে আয়োজিত এই মহাসমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঞ্চের এক পাশে রয়েছে বিশাল আকারের ডিসপ্লে বোর্ড। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের বেঁধে দেয়া সীমানায় ফকিরাপুল, পল্টন, কাকরাইলসহ আশপাশে টাঙানো হয়েছে দেড় শতাধিক মাইক। গণমাধ্যম এবং সংস্কৃতি কর্মীদের জন্য দুটি বড় ট্রাক একত্রিত করে তৈরি করা হয়েছে আলাদা দুইটি মঞ্চ।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত থেকেই নেতা-কর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নয়াপল্টনে জড়ো হতে থাকেন । ভোর থেকেই মঞ্চের আশপাশে নেতা-কর্মীর ভিড় বাড়তে থাকে। সাদা, নীল, লাল, সবুজ ও হলুদ টুপি মাথায় হাজার হাজার নেতা-কর্মী মুহুর্মুহু করতালি দিয়ে স্লোগান দেন রাতভর। মানুষের ভিড় ও চাপ বাড়তে থাকায় সকাল থেকে নয়াপল্টনের দুই পাশের সড়কই যান চলাচল পুলিশ বন্ধ করে দিয়েছে।
মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান বলেন, আমরা প্রথম থেকে বলে আসছিলাম ২৮শে জুলাইয়ের মহাসমাবেশ জনসমুদ্রে পরিণত হবে। এর কোনো সীমানা নেই। এই জনস্রোতকে কোনো সীমানাই দিয়ে রোখা যাবে না। এই সকালে নয়াপল্টনে তার প্রমাণ দিয়েছে অধিকার হারা মানুষেরা।
মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম বলেন, এখন যে মানুষজন দেখছেন এদের বেশির ভাগই বিভিন্ন জেলা থেকে আসা নেতাকর্মীরা। পল্টনের সড়কে দাঁড়ানোর তিল পরিমাণ ঠাঁই নেই। ঢাকার ওয়ার্ডগুলো থেকে মানুষজন আসা শুরু করলে এই জনস্রোত মতিঝিল ছাড়িয়ে যাবে।
আমাদের প্রতিনিধি সকাল ১১টায় সরেজমিন গিয়ে দেখতে পান- কাকরাইল মসজিদের সামনে থেকে নাইটিঙ্গেল মোড় এবং নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়ক হয়ে ফকিরাপুল পর্যন্ত সড়কে বিএনপির নেতা–কর্মীরা অবস্থান নিয়েছেন। অন্যদিকে মালিবাগ আবুল হোটেল থেকে শুরু করে মালিবাগ, মৌচাক, সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজার, বিজয়নগর পানির ট্যাংকসহ নয়াপল্টনের আশপাশের অলিগলিতে বিপুলসংখ্যক নেতা–কর্মী অবস্থান নিয়েছেন।
ঢাকার বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা আসার পাশাপাশি আশে-পাশের জেলা গুলো থেকেও লোকজন মিছিল নিয়ে আসতে দেখা গেছে তখন।
Leave a Reply