আজ ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সময় : বিকাল ৫:৫৩

বার : শনিবার

ঋতু : গ্রীষ্মকাল

শেখ হাসিনার দু:শাসনের ৫৩৭২দিন আওয়ামী সিন্ডিকেটের লুটপাট ও বিদেশে টাকা পাচার আলোচনায় এসেছে বারবার

শেখ হাসিনার দু:শাসনের ৫৩৭২দিন

আওয়ামী সিন্ডিকেটের লুটপাট ও বিদেশে টাকা পাচার আলোচনায় এসেছে বারবার

 শেখ হাসিনার দু:শাসনের ৫৩৭২দিন

শেখ হাসিনার দু:শাসনের ৫৩৭২দিন

নিজস্ব প্রতিনিধি

শেখ হাসিনার প্রত্যক্ষ মদদে আওয়ামী লীগের গত প্রায় ১৫ বছরের দুঃশাসনকালে বাংলাদেশ থেকে অস্বাভাবিক হারে টাকা পাচার হয়েছে। এসব পাচারে রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগের ব্যবসায়ী ও মধ্যম সারির নেতারাও জড়িত রয়েছেন।

গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেগ্রিটির এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, বাংলাদেশ থেকে বছরে গড়ে পাচার হচ্ছে ৬৪ হাজার কোটি টাকা। এসব টাকা পাচার হয়ে চলে যাচ্ছে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সুইজারল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত, থাইল্যান্ডসহ ১০টি দেশে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ পাচার মনিটরিং সংস্থা- বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট বিআইএফইউর এর এক প্রতিবেদন বলছে, আমদানি-রফতানিসহ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে কারসাজি আর হুন্ডির আড়ালে অর্থপাচার করছে পাচারকারী সিন্ডিকেট।

গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেগ্রিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৬ থেকে ২০২০, ৫ বছরে পাচারকারীরা ৩ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে। যার মধ্যে শুধু ২০১৫ সালে ১ বছরেই দেশ থেকে পাচার হয়ে যায় ৯৮ হাজার কোটি টাকা। পাচারকৃত টাকার পরিমাণ বিবেচনায় দক্ষিণ এশিয়ায় পাচারকারী দেশ হিসেবে দ্বিতীয় স্থানে বাংলাদেশ।

উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্যিক লেনদেনের সাড়ে ১৭ শতাংশই কোনো না কোনোভাবে পাচার হচ্ছে বলে আন্তর্জাতিক সংস্থাটির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছিল।

ওয়াশিংটন ভিত্তিক সংস্থা গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেগ্রিটি (জিএফআই) বলছে, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর গড়ে ৭৫৩ কোটি ৩৭ লাখ ডলার পাচার হয়। টাকার অঙ্কে তা প্রায় ৮০ হাজার কোটি টাকা। আর সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২১ সালে দেশটির বিভিন্ন ব্যাংকে বাংলাদেশিদের গচ্ছিত অর্থের পরিমাণ ছিল ৮৭ কোটি ১১ লাখ সুইস ফ্রাঁ, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৮ হাজার ২৭৫ কোটি টাকা। অবশ্য অনেকেই মনে করেন, পাচার করা অর্থের পরিমাণ আরও বেশি হবে।

আর্থিক খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, কানাডা ও মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশিদের তথাকথিত সেকেন্ড হোম তৈরি করা, সিঙ্গাপুরের তারকা হোটেলের মালিকানা নেওয়া ও সুইস ব্যাংকে অর্থ রাখা—এখন বহুল আলোচিত বিষয়। এ ছাড়া সামিট গ্রুপ, এস আলম গ্রুপ সহ আওয়ামী লীগের মানিব্যাগ হিসেবে পরিচিত ব্যবসায়ীদের অর্থ পাচারের অভিযোগ এখন সবারই জানা।

বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রতিবেদন বলছে, প্রধানত ১০টি দেশ এই অর্থপাচারের বড় গন্তব্য স্থল। দেশগুলো হলো সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সুইজারল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত, অস্ট্রেলিয়া, হংকং ও থাইল্যান্ড। আর পাচার চলছে মূলত বাণিজ্য কারসাজি ও হুন্ডির মাধ্যমে।

বিদেশে টাকা পাচারে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের পরই বাংলাদেশের অবস্থান।

জিএফআই এর মতে, উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের মোট বাণিজ্যিক লেনদেনের ১৭ দশমিক ৫ শতাংশই কোনো না কোনোভাবেই পাচার হচ্ছে।

দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা বিদেশে পাচারের ঘটনায় গত ১৩ই ফেব্রুয়ারি উষ্মা প্রকাশ করেছে হাইকোর্ট। আদালত বলেছে, এদেশ কী হরিলুটের জায়গা। যেখানে ছলেবলে কৌশলে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে টাকা বিদেশে পাঠিয়ে দিচ্ছে। এভাবে কি টাকা নিয়ে যাওয়ার সুযোগ আছে। আমরা কি এটা অ্যালাও (অনুমোদন) করতে পারি।

‘জি.বি হোসেন বনাম দুদক এবং অন্যান্য’ মামলার শুনানিকালে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেছিলেন।

শুনানিকালে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেছিলেন, যখন ব্যাংকগুলোতে পলিটিক্যাল অ্যাপয়েন্টমেন্ট হচ্ছে তখন থেকেই লুটপাট শুরু হয়েছে। বেরিয়ে গেছে হাজার হাজার কোটি টাকা। এর মাধ্যমে ব্যাংক খাতকে পঙ্গু করে ফেলা হয়েছে। আর এই লুটপাটের টাকা দিয়েই বিদেশে কেউ বিনিয়োগ করে নাগরিকত্ব অর্জন করছেন। বাড়ি কিনছেন।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     More News Of This Category