আজ ১৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৩০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সময় : সকাল ১১:১৮

বার : মঙ্গলবার

ঋতু : গ্রীষ্মকাল

শেখ হাসিনার দু:শাসনের ৫৩৮৮ দিন ফরমায়েশি রায়ে বিরোধী দলের নেতাদের সাজা দিলেও দণ্ড মওকুফ করা হচ্ছে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের

শেখ হাসিনার দু:শাসনের ৫৩৮৮ দিন

ফরমায়েশি রায়ে বিরোধী দলের নেতাদের সাজা দিলেও দণ্ড মওকুফ করা হচ্ছে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের

 শেখ হাসিনার দু:শাসনের ৫৩৮৮ দিন

শেখ হাসিনার দু:শাসনের ৫৩৮৮ দিন

নিজস্ব প্রতিনিধি

বানোয়াট মামলায় ফরমায়েশি রায়ে বিএনপি চেয়ারপারসন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ বিরোধী দলের নেতাদের কারাদণ্ড দিয়ে আটক রাখলেও গুরুতর অপরাধে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামীদের বিশেষ ক্ষমতায় মুক্তি দিয়েছেন শেখ হাসিনার সরকার। একদিকে ক্ষমতা ও আইনের অপব্যবহার করে বিরোধী দলকে ঘায়েল করতে বানোয়াট মামলা দিয়ে নেতাকর্মীদের কারাগারে আটক রাখা হচ্ছে। অপর দিকে ক্ষমতার একই অপব্যবহারের মাধ্যমে গুরুতর অপরাধে দণ্ডিত ব্যক্তিদের বিশেষ ক্ষমতায় মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।

সংবিধানের ৪৯ নম্বর অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রপতিকে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে দণ্ড মওকুফ, স্থগিত অথবা হ্রাস করার। এতে বলা হয়েছে-‘কোন আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা অন্য কোন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত যে−কোন দণ্ডের মার্জনা, বিলম্বন ও বিরাম মঞ্জুর করিবার এবং যে−কোন দণ্ড মওকুফ, স্থগিত বা হ্রাস করিবার ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির থাকিবে।’

কিন্তু রাষ্ট্রপতিকে সংবিধানে দেওয়া এই ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে চিহ্নিত আওয়ামী গুণ্ডা এবং সন্ত্রাসী খুনিদের কারামুক্ত করা হয়েছে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর থেকে। এতে অনেক দাগী শীর্ষ সন্ত্রাসীও রয়েছেন। যেমন, হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত তোফায়েল আহমেদ জোসেফ রাষ্ট্রপতির ক্ষমায় মুক্ত হন। কুখ্যাত সন্ত্রাসী হিসাবে তিনি পরিচিত। এই সন্ত্রাসী সাবেক সেনা প্রধান আজিজ আহমেদের ছোট ভাই।

এর আগে ২০১৯ সালের ২৮ মার্চ ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারার ক্ষমতাবলে জোসেফের বড় দুই ভাই হারিস আহমেদ ও আনিস আহমেদের সাজা মাফের প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। হারিছ ও জোসেফ দুটি করে এবং আনিস একটি হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত ছিলেন। দীর্ঘদিন কারাভোগের পর রাষ্ট্রপতির বিশেষ ক্ষমায় ২০১৮ সালের ২৭ মে জোসেফ মুক্তি পান। মুক্তি পেয়েই দেশের বাইরে চলে যান। হারিছ ও আনিস পুলিশ রেকর্ডে দীর্ঘদিন পলাতক। তাদের দুজনের দণ্ড মওকুফ করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন জিল্লুর রহমান। সে বছরের নভেম্বর মাসে তিনি জাতীয় সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর ছেলে শাহাদাব আকবরকে ক্ষমা করেন। জরুরী আইনের সরকারের আমলে দুর্নীতি দমন কমিশন ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চারটি মামলায় পলাতক শাহাদাবকে ১৮ বছরের কারাদণ্ড ও ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছিলেন আদালত। এরপর থেকে তিনি পলাতক ছিলেন। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর পলাতক এই ব্যক্তিকে আইনের তোয়াক্কা না করে দণ্ড মওকুফ করার ব্যবস্থা করেছিলেন। আদালতে আত্মসমর্পণ ছাড়াই এধরনের দণ্ড মওকুফের ঘটনায় ব্যাপক বিতর্ক তৈরি হয়েছিল।

বছর যেতে না যেতেই ২০১০ সালের সেপ্টেম্বরে মৃত্যুদণ্ডের সাজা ঘোষিত ২০ জনকে ঢালাওভাবে ক্ষমা করে দেন রাষ্ট্রপতি। নাটোরের যুবদল নেতা সাব্বির আহমেদ গামা হত্যা মামলায় ওই সাজাপ্রাপ্তদের বেশিরভাগই ছিলেন ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মী।

বছর ঘোরার আগেই ২০১১ সালের জুলাই মাসে তিনি লক্ষ্মীপুরের আওয়ামী লীগ নেতার গুণধর পুত্র এএইচএম বিপ্লবের সাজা হ্রাস করেন। আলোচিত নুরুল ইসলাম হত্যা সহ অপর একটি হত্যা মামলায় ফাঁসির জন্য কারাগারে দিন গুনছিল বিপ্লব। ফাঁসি এড়াতে আইনি কাঠামোর ভেতরে থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছিল বিপ্লবের পরিবার। কিন্তু আপিল বিভাগ পর্যন্ত রায়ে বলেছিলেন, সমস্ত তথ্য প্রমাণ করে বিপ্লব হত্যাকারী। তাই তার সাজা হ্রাস করার কোনো প্রশ্ন নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     More News Of This Category