নিজস্ব প্রতিনিধি
দুই মাস ১৩ দিন পর বৃহস্পতিবার (১১ই জানুয়ারি) সকালে তালা ভেঙে নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের বন্ধ গেট খুলেছে বিএনপির নেতাকর্মীরা।
দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে কিছু নেতাকর্মী সকাল ১০টা ৪২ মিনিটে কার্যালয়ের বন্ধ গেটের তালা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করেন। এ সময়ে নেতাকর্মীরা সরকার বিরোধী নানা স্লোগান দিতে থাকে।
এসময় রিজভী বলেন, আমাদের যুবদলের একজন নেতা ও একজন প্রবীণ সাংবাদিক হত্যার মধ্য দিয়ে এক ভয়াবহ নিপীড়নের তাণ্ডব শুরু হয়। গত ২৮শে অক্টোবর বিএনপির শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশ পণ্ড করে পুলিশ এক নারকীয় তাণ্ডব চালিয়ে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তালা লাগিয়ে দিয়েছিল। এই দুই মাসের অধিক সময় পুলিশ কাউকে এখানে ঢুকতে দেয়নি এবং আশপাশে ভিড়লেও তাদের আটক করেছে।
তিনি বলেন, পুলিশ তালা মেরে এই কার্যালয়ের চাবি নিয়ে যায়। কত নাটক করেছে! তারপরে গেট বন্ধ করে দিয়ে চলে যায়। সবই গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা দেখেছেন… জানেন। আমরা আমাদের প্রিয় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এখন ঢুকেছি। পুলিশের কাছে চাবি চাওয়ার পরেও আমাদের চাবি দেয়া হয়নি। পরে আমাদের কর্মীরা তালা ভেঙ্গে এই কার্যালয়ে প্রবেশ করে।
তালা ভাঙ্গার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে রিজভী বলেন, সেইদিনের তাণ্ডবের পর আপনারা দেখেছেন চোখের সামনে তালা লাগিয়ে পুলিশ চাবিয়ে নিয়ে যায়। এরপর কত নাটক ওরা করেছে। আমরা পুলিশের কাছে চাবি চেয়েছিলাম। সেটা তারা দেয়নি।
‘দেশের একটি নিয়মতান্ত্রিক কার্যকর রাজনৈতিক দল বিএনপি। এই দল বার বার রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে অত্যন্ত সুনামের সাথে, দক্ষতার সাথে। সেই দলের প্রধান কার্যালয় একটি মাফিয়াতন্ত্র, একটি মাফিয়া সরকার বন্ধ করে রেখেছে। সুতরাং পুলিশ চাবি না দেয়াতে তালা ভেঙ্গে আমরা ঢুকেছি।’
তিনি বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন পুরো কার্যালয় কী ভয়ঙ্কর ধুলোবালি জমেছে! এটা এখন আমাদের পরিষ্কার করতে হবে। বিকেল ৩টায় আমাদের দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যগণ এই কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করবেন।’
নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ভেতরে প্রবেশ করে দেখা গেছে, পুরো কার্যালয় ধুলোবালির স্তূপ জমেছে। কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের বিভিন্ন কক্ষগুলো এলোমেলোভাবে পড়ে আছে চেয়ার টেবিল, কাগজপত্র, পত্রিকা প্রভৃতি।
গত ২৮শে অক্টোবর দুপুরে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহাসমাবেশ পুলিশ টিয়ারগ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড দিয়ে পণ্ড করে দেয়ার পর থেকে এই কার্যালয় থেকে নেতাকর্মীদের বের করে দিয়ে তালা লাগিয়ে চাবি নিয়ে যায়। এরপর থেকে সিআইডির ‘ক্রাইম সিন’ স্টিকার লাগিয়ে কার্যালয়ের সামনে সবার প্রবেশ বন্ধ করে রাখে এবং এখান থেকে তারা ১১টি আলামত সংগ্রহ করে।
Leave a Reply