আজ ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সময় : দুপুর ১২:৩৯

বার : শনিবার

ঋতু : বর্ষাকাল

দায়িত্ব পালন না করে কুবি উপাচার্য ও কোষাধকের বিরুদ্ধে সম্মানী নেয়ার অভিযোগ।

গুচ্ছের ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় কেন্দ্রে না এসে সম্মানী নেয়ার অভিযোগ উঠেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম. আবদুল মঈন ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে। শিক্ষকদের অভিযোগ, তারা ক্ষমতা অপব্যবহার করে এ সম্মানী নিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ১০ মে গুচ্ছভুক্ত ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) কেন্দ্রের সার্বিক দিক দেখার অংশ হিসেবে উপাচার্যকে ১৫ হাজার টাকা ও কোষাধ্যক্ষকে ১২ হাজার টাকা সম্মানী দেয়া হয়েছে।
শিক্ষকদের অভিযোগ, উপাচার্য-কোষাধ্যক্ষ্ষ তাদের কেউই ওই দিন ভর্তি পরীক্ষা কেন্দ্রের সার্বিক চিত্র দেখার জন্য ভর্তি পরীক্ষার কক্ষ পরিদর্শনে যাননি। তারা ওই দিন কুবি উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ ভিসি বাংলোতে ছিলেন।

এর আগে গত ২৭ এপ্রিল ‘এ’ ইউনিট এবং ৩ মে ‘বি’ ইউনিটের সার্বিক চিত্র দেখতে ক্যাম্পাসে গিয়েছিলেন তারা।

এ বিষয়ে ‘সি’ ইউনিটের কুবির অর্থ কমিটির সদস্য সচিব শুভ্র ব্রত সাহা জানান, সদস্য সচিব হিসেবে তিনি তার দায়িত্ব পালন করেছেন। বিস্তারিত জানতে হলে, প্রতিবেদককে ওই কমিটির আহ্বায়কের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেন।
দায়িত্ব পালন না করে কীভাবে উপাচার্য-কোষাধ্যক্ষ সম্মানী নিলেন এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে অর্থ কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ‘ভিসি বাংলো ক্যাম্পাসের অন্তর্ভুক্ত। আমি অর্থ কমিটির দায়িত্বে ছিলাম, কিন্তু অর্থ বণ্টন করে অর্থ দপ্তর। এতগুলো মানুষের টাকা এক ঘণ্টার মধ্যে বণ্টন করা সম্ভব না বিধায় পরীক্ষা শুরুর আগে থেকেই বণ্টন করা হয়েছে। অর্থ বণ্টনের পর উপাচার্য-কোষাধ্যক্ষ স্যার কেন্দ্রে আসছেন কিনা আমার জানা নাই।’

অর্থ দপ্তরের উপ-পরিচালক মো. নাছির উদ্দিন বলেন, ‘উপাচার্য স্যার বাংলোতে ছিলেন। আমি শুধু আমার দায়িত্ব পালন করেছি। এর বেশি কিছু বলতে পারব না।’
ভর্তি পরীক্ষা কমিটির আহ্বায়ক ও ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আহসান উল্ল্যাহ বলেন, ‘ভিসি আর ট্রেজারার স্যার বাংলোতে ছিলেন। তারা আমার সাথে ছিলেন না, তবে উপ-উপাচার্য স্যার সার্বক্ষণিক আমার সাথে ছিলেন। আমার সঙ্গে বিভিন্ন দপ্তরেও গিয়েছেন।’

উপাচার্য-কোষাধ্যক্ষ কেন ক্যাম্পাসে আসেননি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘উনারা টপ লেভেলের লোক। কেন আসেননি তা আমি জানি না। উনাদের সঙ্গে কথা বলেন। তারা আমাদের নির্দেশ দেয়, সেই অনুযায়ী আমরা কাজ করি। এখন তারা ক্যাম্পাসে আসছে কিনা সেটা তারা ভালো বলতে পারবে।’
কুবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও মার্কেটিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মেহেদী হাসান বলেন, ‘সে (কুবি উপাচার্য) সারা দেশের গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি পরীক্ষা কমিটির কোষাধ্যক্ষের দায়িত্বে আছেন বলে জানি, তবে সে জায়গা থেকে ন্যূনতম দায়িত্ববোধ মনে না করে অর্থনৈতিক সুবিধা নিলেন অনিয়মের মাধ্যমে।’
এ বিষয়ে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘তোমার কাছে ভুল তথ্য আছে। আমি অফিস করেছি, স্বাক্ষরও করেছি।’
কোষাধ্যক্ষ অফিসের সেকশন অফিসার নমিতা পাল বলেন, ‘যতক্ষণ আমি অফিসে ছিলাম স্যারকে দেখি নাই। এরপর আমি পরীক্ষার ডিউটিতে চলে যাই। পরীক্ষা শেষে বাংলোতে গেলেও স্যারকে পাইনি।’

উপাচার্যের পিএস টু ভিসি হোসাইন মোরশেদ ফরহাদ বলেন, ‘স্যার ক্যাম্পাসে আসেন নাই, তবে বাংলোতে ছিলেন।’

কেন আসেননি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘হয়ত মন-মানসিকতা ভালো নাই। এ ধরনের কাজকর্ম চললে সবার তো মন-মানসিকতা খারাপ থাকতেই পারে।’

সার্বিক বিষয়ে জানতে কুবি উপাচার্য অধ্যাপক এএফএম আবদুল মঈনের ফোনে একাধিকবার কল করলেও তাকে পাওয়া যায়নি। এমনকি ভিসি বাংলোতে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     More News Of This Category