প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে নির্বাচন নিয়ে নরেন্দ্র মোদির বিপুল আগ্রহ। যে রাজ্যেই ভোট হোক না কেন তিনি বিপুল বিক্রমে ঝাঁপিয়ে পড়েন। কোটি কোটি রুপি রাষ্ট্রীয় অর্থ খরচ চলে এ প্রচার। শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে সবকিছু মান্যতা পেয়ে যায়। কিন্তু এবার নির্বাচনী প্রচারের একেবারে শেষ ধাপে কন্যাকুমারিকায় বিবেকানন্দ রকে মোদির ধ্যানে বসা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বলা হচ্ছে, মোদির অনুপস্থিতিতে সাউথ ব্লকের (সরকারের) দায়িত্বে আসলে কে?
ভারতের অনলাইন সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়্যারে এ প্রশ্ন তুলে বলা হয়েছে, মন্ত্রিসভার তালিকা অনুযায়ী প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং জ্যেষ্ঠতম। ফলে প্রধানমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে তাঁরই দায়িত্ব পালনের কথা। নরেন্দ্র মোদি কাউকে তাঁর মন্ত্রিসভায় উপ-প্রধানমন্ত্রী বানাননি। ২০১৪ সালে আমেরিকা সফরের সময় মোদি ‘জরুরি সরকারি কাজ’ সম্পাদনের জন্য রাজনাথকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। তবে, এবার প্রায় ৪৫ ঘণ্টা ধ্যানে থাকার সময় আসলে কে দায়িত্ব পালন করবেন, তা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে কিছু বলা হয়নি।ওয়্যারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে একাধিক জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তার সাথে কথা বলা হয়েছিল। তাঁরা কেউই মন্ত্রিসভার দ্বিতীয় স্থান নিয়ে কিছু বলতে পারেননি। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক সাবেক কর্মকর্তা বলেন, নির্বাহী প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, তা তিনিই (মোদি) ঠিক করবেন, কারণ পরমাণু অস্ত্রের দায়িত্ব একান্তই তাঁর। ফলে কাউকে দায়িত্ব না দেওয়াটা খুবই দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচায়ক।‘
একজন সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী একেবারে যোগাযোগের বাইরে যেতে পারেন না। কারণ চীন বা পাকিস্তানের মতো গুরুতর সীমান্ত সমস্যা আছে। সেরকম কিছু হলে তাঁকে ধ্যান ভাঙিয়ে তুলতে হবে। তাছাড়া দৈনন্দিন কাজ মন্ত্রিসভার অন্য সদস্যরা চালিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন।এর আগে ২০১৯ সালে কেদারনাথের গুহায় ধ্যানে বসেছিলেন নরেন্দ্র মোদি। তখন সময় ছিল ১৭ ঘণ্টা। এবার সেটা হয়ে গেছে ৪৫ ঘণ্টা। অভিযোগ রয়েছে, শেষ পর্বের নির্বাচনী প্রচার বন্ধ হওয়ার পরেও প্রচারের আলোয়, বিশেষ করে টিভি পর্দায় ধর্মীয় আবেগে ভর করে থাকতেই নরেন্দ্র মোদির এই উদ্যোগ। হিন্দু ধর্মানুসারে, ধ্যান একান্তই নিজস্ব ব্যাপার। এখানে টিভি ক্যামেরা, লাইট বা অন্য কারও আসার কথা নয়।
Leave a Reply