আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শাপলা চত্বরের ঘটনায় হেফাজতের করা মামলায় শেখ হাসিনা, ইমরান এইচ সরকার, বেনজীর আহমেদসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। এর সাথে, চারজন অভিযুক্ত যারা বর্তমানে কারাগারে আছেন, তাদের প্রোডাকশন ওয়ারেন্টে হাজির করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ১২ মার্চ বুধবার, এই রায় দিয়েছেন বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও দেবাশীষ রায় চৌধুরী।
গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির তালিকায় আরও রয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দিন খান আলমগীর, সাবেক আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার, বেনজীর আহমেদ এবং গণজাগরণ মঞ্চের নেতা ইমরান এইচ সরকার। আদালত ২০১৩ সালের ৫ মে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতের সমাবেশে গণহত্যার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।
এছাড়া, অন্য মামলায় কারাগারে থাকা সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, সাবেক আইজিপি শহিদুল হক, সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান, সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোল্লা নজরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার দেখানোরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গত ২৭ নভেম্বর, শাপলা চত্বরের ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ ৫০ জনকে আসামি করে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনে অভিযোগ দাখিল করেছিলেন হেফাজতে ইসলাম।
এটি ছিল দ্বিতীয় মামলা, যেখানে শেখ হাসিনাসহ ৩৪ জনের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছিল। এ মামলার আবেদন করা হয়েছিল ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৮ আগস্ট, ২০১৮ সালে। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য মতিঝিল থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছিল।
অন্য মামলার আসামিদের মধ্যে আছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাবেক আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার, সাবেক আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক এবং আরও অনেক নেতৃবৃন্দ।
মামলায় বাদী অভিযোগ করেছেন, ২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতে ইসলাম শাপলা চত্বরে তাদের ১৩ দফা দাবি নিয়ে অবস্থান নিলে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে রাত ১১টার দিকে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেন। এরপর শাপলা চত্বরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মাদরাসা ছাত্র ও পথচারীদের ওপর গণহত্যা চালায়। নিহত ব্যক্তিদের লাশ সিটি করপোরেশনের গাড়িতে গুম করা হয়, এবং নিহতদের পরিবার যখন থানায় মামলা করতে যায়, তখন তা গ্রহণ করা হয়নি।
এ ধরনের ঘটনার বিচার ও নির্দিষ্ট আসামিদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে আদালত প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছে, যা বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও আইনগত পরিবেশে নতুন এক মোড় সৃষ্টি করতে পারে।