বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৫০ অপরাহ্ন

যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন কি কমলা হ্যারিস?

bornomalanews
  • Update Time : মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২৪
  • ৫১ Time View

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আর মাত্র আট দিন বাকি। নির্বাচনি প্রচারের শেষ মুহূর্তে ভোটের জন্য ছুটে বেড়াচ্ছেন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডেমোক্রেটিক দলের কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান দলের ডোনাল্ড ট্রাম্প। অনুমান করা হচ্ছে, এবারের নির্বাচনে দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এক জরিপে দেখা গেছে, সাতটি দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্য উভয় প্রার্থীর মধ্যে তীব্র প্রতিযোগিতা হবে। এ অঙ্গরাজ্যগুলো হলো-পেনসিলভানিয়া, মিশিগান, নর্থ ক্যারোলিনা, অ্যারিজোনা, উইসকনসিন, নেভেদা এবং জর্জিয়া। এ অঙ্গরাজ্যগুলোর প্রতিটি ভোটের জন্য ছুটতে হচ্ছে কমলা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। তাদের লক্ষ দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোর ভোটারদের আস্থা অর্জন করা। ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিকান উভয় দলই মনে করছে, দোদুল্যমান ভোটাররা যার দিকে ঝুঁকবেন, তার জন্য হোয়াইট হাউজের যাওয়ার পথ সুগম হবে। এবার দেখা যাচ্ছে, দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোর ডেমোক্রেটিক বলয়ে থাকা লাতিন ভোটারদের টানতে ব্যর্থ হয়েছেন কমলা। এর আগে লাতিন ভোটারদের মধ্যে ডেমোক্রেটিক প্রার্থীদের প্রতি যেমন সমর্থন ছিল, কমলার ক্ষেত্রে তা অনেক কম। তবে কৃষ্ণাঙ্গ নারীদের মধ্যে তার প্রতি সমর্থন বেশি। ২১ অক্টোবর রয়টার্স/ইপসোসের এক জরিপে দেখা গেছে, নিবন্ধিত ভোটারদের মধ্যে ৪৬ শতাংশ কমলা হ্যারিসকে ভোট দেবেন। অপরদিকে ৪৩ শতাংশ ভোটার ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে মত দিয়েছেন। এর আগে তাদেরই করা জনমত যাচাইয়ে কমলা হ্যারিসকে ৪৫ ও ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ৪২ শতাংশ ভোটার সমর্থন জানিয়েছিলেন। তবে ভোট সমীক্ষা সংস্থা ইমারসন কলেজের জনমত রিপোর্টে কমলা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থনের পার্থক্য আরও কমে এসেছে। তাদের রিপোর্ট অনুযায়ী, ৪৯ শতাংশ ভোটার কমলা হ্যারিসকে বেছে নিয়েছেন। অন্যদিকে ট্রাম্পের প্রতি ৪৮ শতাংশ ভোটার সমর্থন জানিয়েছেন। পাশাপাশি এবিসি নিউজের জরিপ বলছে, ৪৮ শতাংশ কমলা হ্যারিস ও ট্রাম্প ৪৬ শতাংশ ভোটারের সমর্থন পেয়েছেন। জনমত জরিপের এ ফল ডেমোক্রেটিক দলের সমর্থকদের কিছুটা চিন্তা বাড়াবে মনে করা হচ্ছে। এ কারণেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দোদুল্যমান সাতটি অঙ্গরাজ্যের ভোটারদের ভোট গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।

যুক্তরাষ্ট্রে জরুরি কাজ, স্বাস্থ্যগত সমস্যা, প্রয়োজনে অন্য অঙ্গরাজ্যে গমন অথবা অন্য কোনো কারণে কেউ ভোটের দিন নির্ধারিত ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত থাকতে না পারলে আগাম ভোট দেওয়ার নিয়ম আছে। এ আগাম ভোট সশরীরে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে অথবা ডাকযোগেও দেওয়া যায়। যুক্তরাষ্ট্রে ভোট দেওয়ার এটি একটি সাধারণ প্রক্রিয়া। নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রে ভিড় এড়াতে এ আগাম ভোট দেওয়ার পদ্ধতি সে দেশে একটি কার্যকর উপায় হিসাবে বিবেচিত। তাতে ভোটের দিনে ভোটকেন্দ্রে অতিরিক্ত চাপ কম হয় এবং নির্ধারিত দিনে নির্বিঘ্নে ভোটগ্রহণ করা যায়। সে দেশের রাজনৈতিক দল এবং তাদের প্রার্থীরা আগাম ভোটের ব্যাপারে উৎসাহী। কারণ, তাতে তারা নির্বাচনের আগেই জানতে পারেন তাদের প্রত্যাশিত ভোটটি পেয়ে গেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় প্রতিটি অঙ্গরাজ্যেই কোনো না কোনোভাবে আগাম ভোটের ব্যবস্থা রয়েছে, যদিও প্রতিটি অঙ্গরাজ্যেই নিয়ম ভিন্ন। যেমন-কোনো কোনো অঙ্গরাজ্যে, যাদের জরুরি কাজ বা প্রয়োজন আছে, তাদের ডাকযোগে ভোট দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। অন্য অঙ্গরাজ্যগুলোতে সব ভোটারকেই এ সুযোগ দেওয়া হয়। এবার ওয়াশিংটন ডিসিসহ ৪৭টি অঙ্গরাজ্যে আগাম ভোটের প্রস্তুতি চলছে। অঙ্গরাজ্যগুলোর মধ্যে শুধু আলাবামা, মিসিসিপি ও নিউ হ্যাম্পশায়ারে আগাম ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা নেই। আগাম ভোটগ্রহণ মূলত নির্বাচনের দুই সপ্তাহ আগে থেকে শুরু হয়; চলে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত। ২৬ অক্টোবর, এ লেখা যখন লিখছি, তখন পর্যন্ত এবারের নির্বাচনে প্রায় ২ কোটি ৮০ লাখ ভোটার আগাম ভোট দিয়েছেন। সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, যারা ভোট দিয়েছেন তাদের প্রায় ৪৩ শতাংশ নিবন্ধিত ডেমোক্রেট এবং ৩৯ শতাংশ হচ্ছেন নিবন্ধিত রিপাবলিকান।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করার ক্ষেত্রে তাদের নিজস্ব নির্বাচন পদ্ধতি আছে। সে দেশে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া মানে ভাইস প্রেসিডেন্টও নির্বাচিত হয়েছে ধরে নেওয়া হয়। জাতীয় পর্যায়ের নির্বাচনি লড়াইয়ের বদলে জয়-পরাজয় নির্ধারিত হয় একেকটি অঙ্গরাজ্যের নির্বাচনি লড়াইয়ের মাধ্যমে। জনসংখ্যার ভিত্তিতে সব অঙ্গরাজ্য ও ওয়াশিংটন ডিসির জন্য নির্ধারিত রয়েছে আলাদা আলাদা ইলেকটোরাল ভোট সংখ্যা বা ‘ইলেকটোরাল কলেজ’। ইলেকটোরাল কলেজ মানে কর্মকর্তাদের একটি প্যানেল বা নির্বাচকমণ্ডলী। প্রতি চার বছর পরপর এটি গঠন করা হয়। কংগ্রেসে প্রতিনিধিত্বের অনুপাতে প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের নির্বাচকমণ্ডলীর সংখ্যা নির্ধারিত হয় সেই অঙ্গরাজ্যের সিনেটরের সংখ্যা এবং প্রতিনিধি পরিষদে প্রতিনিধির যোগফল মিলে। এ ক্ষেত্রে প্রতিটি অঙ্গরাজ থেকে দুজন সিনেটর এবং জনসংখ্যার অনুপাতে প্রতিনিধি পরিষদের প্রতিনিধি নির্ধারিত হয়। যেসব অঙ্গরাজ্যে জনসংখ্যা বেশি, সেসব অঙ্গরাজ্যে ইলেকটোরাল ভোটও বেশি। যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে ৫০টি অঙ্গরাজ্য এবং একটি ফেডারেল ডিস্ট্রিক্ট অর্থাৎ রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার ইলেকটোরাল ভোট সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, চুয়ান্ন। যেসব অঙ্গরাজ্যের জনসংখ্যা খুবই কম, তাদের হাতে অন্তত তিনটি ইলেকটোরাল ভোট আছে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ‘উইনার-টেক-অল’ নীতি মেনে চলা হয়। অর্থাৎ যে অঙ্গরাজ্যে যে প্রার্থী সবচেয়ে বেশি মানুষের ভোট পাবেন, সেই অঙ্গরাজ্যে সব ইলেকটোরাল ভোট তার হয়ে যাবে। যেমন-ক্যালিফোর্নিয়ায় কমলা হ্যারিস ভোটারদের সরাসরি ভোটের ৫০.১ শতাংশ যদি পেয়ে যান, তাহলে তিনি সেখানকার ৫৪টি ইলেকটোরাল ভোটের সবই পেয়ে যাবেন। যুক্তরাষ্ট্রে সব অঙ্গরাজ্য এবং ওয়াশিংটন ডিসি মিলিয়ে মোট ইলেকটোরাল ভোট সংখ্যা ৫৩৮। প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য প্রার্থীকে এর অর্ধেকের চেয়ে একটি বেশি অর্থাৎ ২৭০টি ইলেকটোরাল ভোট পেতে হবে। কমলা হ্যারিস বা ডোনাল্ড ট্রাম্প যে কোনো একজন সারা দেশে কম ভোট পেলেও ইলেকটোরাল ভোটে এগিয়ে থেকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে পারবেন। ২০১৬ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প যেমন হিলারি ক্লিনটন থেকে প্রায় ৩০ লাখ ভোটে পিছিয়ে থেকেও প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন।

ভোটের দিন যতই এগিয়ে আসছে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের অসংলগ্ন কথাবার্তা ততই বেড়ে চলছে। নির্বাচনি প্রচারের শেষ সপ্তাহে এসেও ট্রাম্প অশ্লীল ও স্বৈরতান্ত্রিক ভাষায় বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কমলাকে ব্যক্তিগত আক্রমণও করছেন। বিগত দুটো প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মতো এবারও জয়লাভের জন্য তিনি ইসলাম ও অভিবাসনবিরোধী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। অভিবাসীদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করতে গিয়ে ট্রাম্প যে অমার্জনীয় ভাষায় কথা বলছেন, তা নিজ দলের অনেকেই ভালোভাবে নিচ্ছেন না। ট্রাম্পের মুখের ভাষা এতই নোংরা, তিনি অভিবাসীদের আবর্জনা বলতেও দ্বিধা করছেন না। ট্রাম্প অ্যারিজোনায় এক নির্বাচনি জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেছেন, ‘আমরা আসলে বাকি বিশ্বের কাছে আবর্জনার পাত্রের মতো। ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে আবর্জনার পাত্র বলতে গিয়ে পক্ষান্তরে অভিবাসীদের আবর্জনার সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি এ বিষয়ে কমলা হ্যারিসকে দোষারোপ করে বলেছেন, ‘কমলা হ্যারিস আসলে সেসব অপরাধীমনস্ক অভিবাসীর জন্য আমেরিকায় প্রবেশের দরজা খুলে দিয়েছেন, যারা বিশ্বের নানা প্রান্তের কারাগার এবং মানসিক পুনর্বাসন কেন্দ্র থেকে ছাড়া পেয়ে এখানে আশ্রয় নিয়েছে। অভিবাসীরা ট্রাম্পের কাছে এতই স্পর্শকাতর বিষয়, তিনি অভিবাসীদের দেহে ‘খারাপ জিন’ রয়েছে বলেও প্রচার করে বেড়াচ্ছেন।

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি ফৌজদারি মামলা ঝুলছে। এরই মধ্যে ২০২০ সালের নির্বাচনের ফল পালটানোর চেষ্টা মামলার নথি প্রকাশ করলে তিনি বিচারক তানিয়া ছুকেনকে ‘সবচেয়ে শয়তান ব্যক্তি’ বলে অভিহিত করেছেন। নির্বাচনি ফল পালটানোর চেষ্টার মামলায় সংশোধিত অভিযোগ দাখিল করেন স্পেশাল কাউন্সেল জ্যাক স্মিথ। তারই একটি অংশ প্রকাশ করা হয়েছে। এজন্য ট্রাম্প স্মিথকে ‘অসুস্থ কুকুরছানা’ বলে সম্বোধন করেছেন। ট্রাম্পের এরূপ আচরণ নিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, ট্রাম্প আবারও প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে যুক্তরাষ্ট্র একটি ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ সরকার পাবে। কারণ ট্রাম্প এমন মানসিকতার একজন ব্যক্তি, তিনি কখন কী করে বসবেন, কারও জানার সুযোগ থাকবে না।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ইসরাইল একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ইহুদিরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। মজার ব্যাপার হলো, ট্রাম্প ইসরাইলপন্থি হলেও ইহুদিবিদ্বেষী হিসাবেই পরিচিত। প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন ট্রাম্প আন্তর্জাতিক আইন অগ্রাহ্য করে জেরুজালেমে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস সরিয়ে নিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, ওয়াশিংটনে পিএলও’র অফিস তিনি বন্ধ করে দিয়েছিলেন। ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তু সংস্থার জন্য আর্থিক অনুদানও বন্ধ করে দিয়েছিলেন ট্রাম্প। সম্প্রতি ইহুদিদের এক অনুষ্ঠানে অতিথি হিসাবে বক্তব্য দিতে গিয়ে ট্রাম্প ডেমোক্রেটদের যেসব ইহুদি ভোট দেন, তাদের মাথা পরীক্ষা করার কথা বলেছিলেন। এর আগে তিনি ইহুদিদের ধর্মানুভূতিতে আঘাত দিয়ে বলেছিলেন, যারা ডেমোক্রেটদের ভোট দেন, তারা আসলে নিজের ধর্ম ও জাত পরিচয়কে ঘৃণা করেন। এসব কথা ইহুদি ভোটারদের আরও ক্ষেপিয়ে তুলেছে। ইহুদি নেতারা ট্রাম্পের এ বক্তব্যকে প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, ট্রাম্পের কথা বিদ্বেষপূর্ণ, যা কেবল অশ্রাব্য ভাষার প্রলাপের সঙ্গেই তুলনা চলে। অপরদিকে ইহুদিদের নিয়ে কমলা হ্যারিস বেশ আস্থাশীল। গত তিনটি নির্বাচনে সারা দেশে প্রায় ৭০ শতাংশ ইহুদি ডেমোক্রেটদের পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন। অপরদিকে যে মুসলিম ভোটারদের ডেমোক্রেট দলের ভোটব্যাংক হিসাবে ধরা হয়, এবার তার ব্যতিক্রম ঘটবে বলে মনে হচ্ছে। গাজা ও লেবাননে ইসরাইলের হামলা বন্ধে সরকারের ব্যর্থতা আরব বংশোদ্ভূত মুসলিমদের আঘাত দিয়েছে। বাইডেনের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসাবে কমলাকেও এ ব্যর্থতার দায়ভার নিতে হবে বলে তারা মনে করেন। এত প্রাণহানির কোনো জবাবদিহি নেই। এজন্য আরব-মুসলিমদের অনেকেই হয়তো কমলাকে ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকবেন। তবে তারা ট্রাম্পকে ভোট দেবেন এমন মনে করার কারণও নেই।

জনসমর্থনের পার্থক্য যদিও কমে আসছে, তারপরও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, খুব কম ভোটের ব্যবধানে হলেও কমলা হ্যারিসের যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এমন ধারণার কারণ হিসাবে বলা হচ্ছে, ২০১৬ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে রিপাবলিকান দল পরাজয়ের ধারায় রয়েছে। ২০১৮ সালে প্রতিনিধি পরিষদে ডেমোক্রেটদের ভূমিধস জয়। ২০২২ সালে রিপাবলিকানরা মধ্যবর্তী নির্বাচনে বিব্রতকর অবস্থায় এসেছে। এসব নির্বাচন থেকে রিপাবলিকানরা শিক্ষা নেয়নি। আরও একটি বিষয়ে জোর দেওয়া হচ্ছে, তা হলো পরাজিত হয়ে ট্রাম্পকে একবার হোয়াইট হাউজ থেকে বেরিয়ে যেতে হয়েছে। তারা মনে করেন, যারা মানুষকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করেন, যাদের মুখের ভাষা ও কাজের ওপর নিয়ন্ত্রণ থাকে না, তাদের কেউ দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় ফিরলে আরও কঠোর হন; যেন তাদের ক্ষমতা হারাতে না হয়। এজন্য তারা রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও নিয়মকানুন ধ্বংস করতে শুরু করেন। এমন উদাহরণ পৃথিবীতে অনেক আছে। এসব বিবেচনায় ট্রাম্পের ভাবমূর্তিও তেমন স্বচ্ছ নয়। ২০১৬-২০ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকাকালীনই ট্রাম্প প্রেসিডেন্টের সাংবিধানিক ক্ষমতার সীমাবদ্ধতা মানেননি। ট্রাম্প ইতোমধ্যে ঘোষণা করেছেন, তিনি তার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের দেখেন শত্রু হিসাবে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে তিনি তার প্রেসিডেন্সি পদের বিরোধিতাকারীদের দেখে নেবেন বলে হুঁশিয়ারও করেছেন। তার এ বক্তব্যের মধ্য দিয়ে তিনি যে হুমকি দিয়েছেন, তাতে এ ইঙ্গিতই মেলে, যদি ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন, তাহলে সরকারের ক্ষমতাকে তিনি বিপজ্জনক উপায়ে ব্যবহার করবেন। ট্রাম্পের এ প্রতিশোধপরায়ণ মনোভাব, সুস্থ রাজনীতির জন্য সুখকর নয়। এটা বরং যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের ওপর আঘাত হানবে। ভোট দেওয়ার সময় ভোটাররা নিশ্চয়ই এ বিষয়গুলোও বিবেচনা করবেন।

 

একেএম শামসুদ্দিন : অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 bornomalanews24.com
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102