আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির পশুর চামড়ার ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়গুলোতে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। রবিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে তিনি এই নির্দেশ দেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টারা এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। প্রধান উপদেষ্টা তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন যে, দীর্ঘদিন ধরে কোরবানির পশুর চামড়ার ন্যায্যমূল্য থেকে মানুষ বঞ্চিত হয়ে আসছে। এর ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সমাজের হতদরিদ্র মানুষ, যারা এই চামড়া বিক্রির আয়ের ওপর নির্ভরশীল। তিনি বলেন, এই অব্যবস্থাপনার অবসান হওয়া অত্যন্ত জরুরি। চামড়ার বাজারে সিন্ডিকেটের প্রভাবের কথা উল্লেখ করে তিনি জানান, সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে যাতে কোনো সিন্ডিকেট বা অব্যবস্থাপনার কারণে মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। এছাড়াও, কোরবানির পশু পরিবহন এবং হাটে বিক্রির সময় পশুর প্রতি নির্দয় আচরণ বন্ধ করার ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি। চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণের ক্ষেত্রে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি, বিশেষত ইটিপি (এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট) ব্যবহারের বিষয়েও তিনি জোর দেন। এই নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের নেতৃত্বে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কমিটিতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ, শিল্প, পরিবেশ, সড়ক পরিবহন, স্থানীয় সরকার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টারা এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরা অন্তর্ভুক্ত থাকবেন। প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এবং তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। বৈঠকে কোরবানির পশুর চামড়ার ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতকরণ এবং সার্বিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এই উদ্যোগের মাধ্যমে কোরবানির পশুর চামড়ার বাজারে স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব প্রক্রিয়াজাতকরণে সরকারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত হয়েছে।