জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) শিক্ষার্থীরা সম্পূরক বৃত্তি চালু, কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা এবং ক্যাফেটেরিয়া ও লাইব্রেরির উন্নয়নসহ তিন দফা দাবিতে টানা অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন। মঙ্গলবার দুপুর ২টা থেকে শুরু হওয়া এ কর্মসূচি বুধবার ভোর পর্যন্ত অব্যাহত থাকে, প্রায় ১৩ ঘণ্টা ধরে কয়েকজন শিক্ষার্থী অনশনস্থলে অবস্থান করেন। ভাষা শহীদ রফিক ভবনের নিচে বসে থাকা শিক্ষার্থীদের মধ্যে রয়েছেন—১৩তম ব্যাচের একেএম রাকিব, ১৫তম ব্যাচের ফয়সাল মুরাদ, ১৬তম ব্যাচের ফেরদৌস শেখ ও শাহিন মিয়া এবং ১৮তম ব্যাচের অপু মুন্সি। তাদের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে অবহেলার শিকার হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা, অথচ প্রশাসন কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না। বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের মুখ্য সংগঠক ফেরদৌস শেখ অভিযোগ করে বলেন, “মন্ত্রণালয়ের সব শিকল ভেঙে জবিয়ানদের অধিকার এখন আটকে আছে প্রশাসনের কাছে। যোগাযোগের অভাবেই শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছে। তারা নানা কাটছাঁট করে শিক্ষাবৃত্তি আনার চেষ্টা করছে, যা আমরা মেনে নেব না।” একই সংগঠনের আহ্বায়ক ফয়সাল মুরাদ বলেন, “আমরা জীবন দিতে প্রস্তুত, এখন সিদ্ধান্ত প্রশাসনের হাতে। জকসু ১৮ হাজার শিক্ষার্থীর অধিকার, কিন্তু সদিচ্ছার অভাবে এটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে না।” জবি ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি একেএম রাকিব জানান, “অবস্থানসহ নানা কর্মসূচি দিয়েছি, কিন্তু প্রশাসন কর্ণপাত করেনি। তাই বাধ্য হয়েই অনশনে বসেছি। এখন আমরা কয়েকজন আছি, কাল এই সংখ্যা আরও বাড়বে।” শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি ১. সম্পূরক বৃত্তি কবে থেকে কার্যকর হবে তা দ্রুত জানাতে হবে। ২. জকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রকাশ করতে হবে। ৩. ক্যাফেটেরিয়ায় ভর্তুকি ও স্বাস্থ্যকর খাবার নিশ্চিত করতে হবে এবং কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে আধুনিক সুযোগ–সুবিধা ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ চালু করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা এ আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে অনশনকারীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। ফলে ক্যাম্পাসে নতুন করে উত্তাপ ছড়িয়েছে, যা প্রশাসনের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করেছে। এখন সবার নজর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দিকে—তারা সমাধানে এগোবে, নাকি অনশন আরও দীর্ঘ হবে।