দক্ষিণ কোরিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে দেশটির একটি আদালত। আজ মঙ্গলবার সিউল ওয়েস্টার্ন ডিস্ট্রিক্ট আদালত এই পরোয়ানা জারির আবেদন অনুমোদন করেছেন বলে নিশ্চিত করেছে দক্ষিণ কোরিয়ার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের দুর্নীতি তদন্ত কার্যালয় (সিআইও)।
ইউন সুক-ইওল সম্প্রতি দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। গত ৩ ডিসেম্বর তিনি দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন জারি করেন। তবে জনগণের তীব্র প্রতিবাদের মুখে মাত্র ছয় ঘণ্টার মধ্যে তিনি তা প্রত্যাহারে বাধ্য হন। এই ঘটনায় জনমনে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিলে ১৪ ডিসেম্বর পার্লামেন্টে তাঁকে অভিশংসিত করা হয় এবং প্রেসিডেন্টের পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
অভিশংসনের পর তাঁর ভবিষ্যৎ এখন পুরোপুরি সাংবিধানিক আদালতের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে। আদালত যদি তাঁর অভিশংসন বহাল রাখে, তাহলে ইউন সুক-ইওল চূড়ান্তভাবে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে অপসারিত হবেন।
দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাসে এই প্রথমবার কোনো বর্তমান প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলো। সিআইও-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ইউনের বাসভবনে তল্লাশির জন্যও আদালত পরোয়ানা অনুমোদন করেছেন। তবে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কখন বা কীভাবে কার্যকর করা হবে, তা এখনো অনিশ্চিত।
আদালত কী যুক্তিতে এই পরোয়ানা জারি করেছেন, সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি সিআইও বা আদালত। প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সংস্থা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিষয়টি বিবেচনা করবে।
ক্ষমতাসীন পিপল পাওয়ার পার্টির ভারপ্রাপ্ত নেতা কেওন সিওং-ডং বলেছেন, “একজন বর্তমান প্রেসিডেন্টকে আটক করার চেষ্টা সঠিক সিদ্ধান্ত নয়।” অন্যদিকে, ইউনের সামরিক আইন জারির ঘটনায় রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগের বিষয়টি তদন্তের আওতায় আনা হয়েছে। উল্লেখ্য, রাষ্ট্রদ্রোহ-সংক্রান্ত অভিযোগের ক্ষেত্রে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কোনো দায়মুক্তি ভোগ করেন না।
ইউনের বিরুদ্ধে পরোয়ানার এই ঘটনা দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনৈতিক ইতিহাসে নজিরবিহীন। প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ও অভিশংসন প্রক্রিয়া দেশটির রাজনীতিতে গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। তদন্ত এবং আদালতের পরবর্তী সিদ্ধান্তের দিকে এখন পুরো দেশের নজর।