জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা তিন দফা দাবিতে টানা ৩৩ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। রাজধানীর কাকরাইল মসজিদের মোড়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের অভিমুখে অবস্থান নিয়ে এই আন্দোলন চলছে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্তরের মানুষ আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করছেন। সরেজমিনে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা একত্রিত হয়ে স্লোগানে মুখরিত করে তুলেছেন পুরো এলাকা। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করতে উপস্থিত হয়েছেন সাবেক শিক্ষার্থীরাও। সড়কের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীরা আলাদা আলাদা দলে জড়ো হয়ে তাদের দাবি আদায়ের জন্য স্লোগান দিচ্ছেন। সকাল থেকে টানা আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের সাথে একাত্ম হয়ে রয়েছেন শিক্ষক, কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরাও। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রাইসুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমরা টানা আন্দোলন করে যাচ্ছি, কিন্তু কোনো ফলপ্রসূ ফলাফল দেখতে পাচ্ছি না।” তার বক্তব্যে সরকারের প্রতি অসন্তোষ স্পষ্ট হয়ে ওঠে। জবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মো. মোশাররফ হোসেন আন্দোলনের বিষয়ে বলেন, “আমরা টানা ৩৩ ঘণ্টা এখানে অবস্থান করার পরেও সরকারের পক্ষ থেকে কেউ আমাদের দাবিগুলো মেনে নেওয়া তো দূরের কথা, আমাদের দেখতে পর্যন্ত আসেনি। সরকারের কাছে আমার প্রশ্ন, কেন আমাদের নিয়ে এমন নির্লিপ্ততা? ঢাবির কোনো ঘটনা ঘটলে সবাই ছুটে যায়, তাহলে আমাদের ক্ষেত্রে এমন উদাসীনতা কেন?” তিনি আরও বলেন, “আমাদের দাবি যতক্ষণ না মানা হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে এখানেই অবস্থান করবো। যদি কোনো শিক্ষক-শিক্ষার্থী বা কারো জানমালের ক্ষতি হয়, তার দায়ভার সম্পূর্ণ রাষ্ট্রকেই নিতে হবে।” এই আন্দোলন শুধু শিক্ষার্থীদের নয়, বরং পুরো বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সম্মিলিত প্রতিবাদে পরিণত হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো সাড়া না পাওয়ায় আন্দোলনকারীদের মধ্যে হতাশা বাড়ছে। তবে তাদের দৃঢ় মনোভাব এবং একতাবদ্ধ অবস্থান আন্দোলনকে আরও শক্তিশালী করে তুলেছে।