আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
শ্রমিক সংকটের কারণে উৎপাদন সক্ষমতা দেশের বাইরে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করছে রাশিয়ার বৃহত্তম পোশাক প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান গ্লোরিয়া জিনস। পোশাক ও জুতা প্রস্তুতকারী এই প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশসহ কয়েকটি দেশে তাদের উৎপাদন সরিয়ে নেওয়ার চিন্তা করছে।
রুশ গণমাধ্যম কমারসান্ত-এর বরাত দিয়ে ইউক্রেইনস্কা প্রাভদা জানিয়েছে, এই পদক্ষেপের কারণে রাশিয়ার রস্তভ অঞ্চলের কারখানাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এরই মধ্যে সালস্কের একটি সেলাই কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে কর্মরত শ্রমিকদের অন্য কারখানায় চলে যাওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। রাশিয়াজুড়ে গ্লোরিয়া জিনসের ১৮টি কারখানা রয়েছে। তবে এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটি কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
বাংলাদেশসহ কয়েকটি দেশে নজর
সংবাদে বলা হয়েছে, গ্লোরিয়া জিনস তাদের উৎপাদন ভিয়েতনাম, বাংলাদেশ বা উজবেকিস্তানে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করছে। উজবেকিস্তানে তুলার উৎপাদন হয়, ফলে সেখানে কাঁচামালের স্থিতিশীল সরবরাহ নিশ্চিত করা সম্ভব। পাশাপাশি, এই দেশগুলোতে ভালো মানের শিল্পসুবিধা এবং তুলনামূলক কম উৎপাদন খরচের সুযোগ রয়েছে।
একসময় চীন ছিল রাশিয়ার পোশাক প্রস্তুতকারকদের পছন্দের তালিকায়। তবে বর্তমানে চীনে শ্রমিক মজুরি অনেক বেশি হওয়ায় রুশ ব্র্যান্ডগুলো সেখানে তেমন আগ্রহী নয়।
শ্রমিক সংকট ও মানহীন কাঁচামাল
রাশিয়ার পোশাক শিল্পে দক্ষ কর্মীর ঘাটতি দিন দিন তীব্র হচ্ছে। ২০২৪ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে এই সংকট আরও বেড়েছে। শ্রমিক সংকটের পাশাপাশি রাশিয়ায় উৎপাদিত কাঁচামাল এবং আনুষঙ্গিক উপকরণের মান খারাপ হওয়ায় ব্যবসায়ীদের বাইরে থেকে পণ্য আমদানি করতে হচ্ছে।
পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়ায় সেলাই যন্ত্রপাতি আমদানির বিষয়টি জটিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। নিষেধাজ্ঞার ফলে আমদানি করা যন্ত্রপাতির বিপরীতে মূল্য পরিশোধ করা যাচ্ছে না। ফলে রুশ ব্যবসায়ীরা দেশীয় উৎপাদনে বাধার মুখে পড়ছেন।
দক্ষ শ্রমশক্তির কারণে বাংলাদেশকে অগ্রাধিকার
বিশ্লেষকরা বলছেন, গ্লোরিয়া জিনস তাদের উৎপাদন কার্যক্রমের জন্য বাংলাদেশকে অগ্রাধিকার দিতে পারে। কারণ, এখানে দক্ষ শ্রমশক্তি এবং উন্নত শিল্পসুবিধা বিদ্যমান। পাশাপাশি, তুলনামূলক কম উৎপাদন খরচ বাংলাদেশের প্রতি আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলোর আগ্রহ বাড়াচ্ছে।
বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেও বাংলাদেশে পোশাক শিল্প একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে, যা গ্লোরিয়া জিনসের মতো কোম্পানির জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করতে পারে।