সিডনি টেস্টের প্রথম দিনেই দেখা মিলল ক্যাচ নিয়ে বড় বিতর্কের। অস্ট্রেলিয়া-ভারত বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির পঞ্চম টেস্টে বিরাট কোহলির একটি বিতর্কিত ক্যাচ নিয়ে মাঠের আম্পায়ার থেকে শুরু করে সাবেক ক্রিকেটারদের মধ্যে শুরু হয়েছে মতবিরোধ।
ঘটনাটি ঘটে ইনিংসের অষ্টম ওভারে। দ্বিতীয় উইকেট হারিয়ে ১৭ রানে ভারতের ব্যাটিং বিপর্যয়ের মধ্যেই ক্রিজে আসেন কোহলি। স্কট বোল্যান্ডের প্রথম বলেই দ্বিতীয় স্লিপে দাঁড়ানো স্টিভেন স্মিথ ক্যাচ দাবি করেন। স্মিথ ডান দিকে ঝাঁপিয়ে বলটি মাটির কাছাকাছি থেকে হাতে নেন। এরপর বলটি গালিতে থাকা মারনাস লাবুশেনের দিকে ছুড়ে দেন, যিনি সেটি তালুবন্দী করেন। অস্ট্রেলিয়ান শিবিরে তখন উচ্ছ্বাসের বন্যা। কিন্তু কোহলি এই ক্যাচ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে ক্রিজে দাঁড়িয়ে থাকেন।
মাঠের আম্পায়ার তৃতীয় আম্পায়ারের সাহায্য নেন। রিপ্লেতে দেখা যায়, স্মিথ বল ধরার সময় সেটি মাটিতে লেগেছিল। তৃতীয় আম্পায়ার জোয়েল উইলসন এমসিসি আইনের ৩৩ ধারা অনুযায়ী নিশ্চিত হন যে এটি ‘ফেয়ার ক্যাচ’ ছিল না। কোহলিকে নটআউট ঘোষণা করেন তিনি। তবে বিতর্ক এখানেই শেষ হয়নি।
লাঞ্চ বিরতিতে স্মিথ সাংবাদিক ইশা গুহকে বলেন, “১০০ ভাগ নিশ্চিত ওটা ক্যাচ ছিল। তবে সিদ্ধান্ত আম্পায়ারের হাতে।” অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ক্রিকেটার মার্ক ওয়াহ ও অ্যালান বোর্ডার স্মিথের সঙ্গে একমত পোষণ করেন। ওয়াহ বলেন, “বল ঘাসের খুব কাছাকাছি ছিল, কিন্তু স্মিথ আঙুল দিয়ে আগেই তুলে নিয়েছে।” একই সুরে বোর্ডার বলেন, “প্রমাণে মনে হয়েছে স্মিথের আঙুল বলের নিচেই ছিল।”
তবে ভারতের সাবেক ক্রিকেটার ইরফান পাঠান ও ধারাভাষ্যকার সঞ্জয় মাঞ্জরেকার এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছেন। পাঠান এক্সে লিখেছেন, “কোহলিকে সঠিকভাবেই নটআউট দেওয়া হয়েছে।” মাঞ্জরেকারও ক্যাচ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন।
এদিকে, ঘটনার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই আইসিসি একটি বিবৃতি দিয়ে জানায়, তৃতীয় আম্পায়ার ফেয়ার ক্যাচ বিষয়ে যথেষ্ট প্রমাণ পাননি বলেই কোহলিকে নটআউট ঘোষণা করা হয়েছে।
তবে বিতর্কিত এই সিদ্ধান্তে বাঁচলেও কোহলি ইনিংস বড় করতে পারেননি। ৬৯ বলে ১৭ রান করে আবারও বোল্যান্ডের বলে আউট হন। এবারে অভিষিক্ত বো ওয়েবস্টার ক্যাচটি নেন। ভারতের স্কোর তখন ৪ উইকেটে ৭২।
সিরিজে অস্ট্রেলিয়া এখন ২–১ ব্যবধানে এগিয়ে। কিন্তু একের পর এক ক্যাচ-বিতর্ক এই সিরিজকে কেন্দ্র করে নতুন বিতর্কের জন্ম দিচ্ছে, যা ক্রিকেটপ্রেমীদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।