ভোক্তাদের জন্য সুখবর নিয়ে এলো সরকার। তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম কমলো। চলতি মার্চ মাসের জন্য প্রতি ১২ কেজি এলপিজি সিলিন্ডারের দাম ২৮ টাকা কমানো হয়েছে। নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে এক হাজার ৪৫০ টাকা, যা ফেব্রুয়ারি মাসে ছিল এক হাজার ৪৭৮ টাকা। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) এই নতুন দাম ঘোষণা করে। আর এই দাম কার্যকর হবে আজ সন্ধ্যা থেকেই।
এলপিজির দাম কমানোর এই সিদ্ধান্ত ভোক্তাদের জন্য স্বস্তির খবর বয়ে আনলেও, বাস্তবতা কিছুটা ভিন্ন। প্রাকৃতিক গ্যাসের নতুন সংযোগ বন্ধ থাকায় গৃহস্থালি রান্না থেকে শুরু করে রেস্তোরাঁ, পরিবহন, এমনকি ছোট-বড় শিল্প-কারখানায়ও এলপিজির ব্যবহার ব্যাপক হারে বেড়েছে। কিন্তু বাজারে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে অনেক বেশি দামে এলপিজি বিক্রি হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বাজার পরিদর্শন করলে এই অভিযোগের সত্যতাও মেলে।
এদিকে, গাড়িতে ব্যবহৃত অটোগ্যাসের দামও কমেছে। প্রতি লিটার অটোগ্যাসের দাম ১.৩১ টাকা কমানো হয়েছে। নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৬.৪৩ টাকা। এই সিদ্ধান্তে পরিবহন খাতেও কিছুটা স্বস্তি ফিরবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রতি মাসে এলপিজির দাম নির্ধারণ করে বিইআরসি। সৌদি আরামকো কম্পানির প্রপেন ও বিউটেনের দামের সঙ্গে সমন্বয় করে এই মূল্য নির্ধারণ করা হয়। ২০২১ সালের ১২ এপ্রিল দেশে প্রথমবারের মতো এলপিজির দাম নির্ধারণ করে বিইআরসি। তারপর থেকে প্রতি মাসে একবার করে দাম সমন্বয় করা হচ্ছে।
এলপিজির দাম কমানো নিঃসন্দেহে ভোক্তাদের জন্য ইতিবাচক খবর। কিন্তু প্রশ্ন হলো, বাজারে এই দাম কতটা কার্যকর হবে? সরকারি নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে এলপিজি বিক্রির অভিযোগ যদি সত্য হয়, তাহলে ভোক্তাদের প্রকৃত সুবিধা কতটুকু হবে? এছাড়া, প্রাকৃতিক গ্যাসের সংযোগ বন্ধ থাকায় এলপিজির চাহিদা বাড়ছে। এই বাড়তি চাহিদা মেটাতে সরকারের পরিকল্পনা কী?
এই সিদ্ধান্তের পেছনে আন্তর্জাতিক বাজারের প্রভাব যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে দেশের ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতার বিষয়টিও। কিন্তু শুধু দাম কমানোই যথেষ্ট নয়। দাম কমানোর পাশাপাশি বাজারে এর সঠিক বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা জরুরি। নাহলে, ভোক্তারা সরকারি সিদ্ধান্তের সুফল থেকে বঞ্চিত হবেন।
এলপিজির দাম কমানো একটি ভালো সিদ্ধান্ত। কিন্তু এই সিদ্ধান্তের সফলতা নির্ভর করছে এর সুষ্ঠু বাস্তবায়নের ওপর। ভোক্তাদের জন্য এই সিদ্ধান্ত কতটা কার্যকর হবে, তা এখন সময়ই বলবে। তবে, সরকারের উচিত বাজারে নিয়মিত মনিটরিং জোরদার করা, যাতে ভোক্তারা প্রকৃত সুবিধা পেতে পারেন।