আসন্ন বাজেটে রাজস্ব আহরণ এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারে নানামুখী উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান। রবিবার রাজধানীর বনানীতে একটি হোটেলে আয়োজিত সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। সেমিনারটির আয়োজন করে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সংগঠন ফরেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফআইসিসিআই), দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি), এবং জাপান-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (জেবিসিসিআই)। প্রধান অতিথির বক্তব্যে এনবিআর চেয়ারম্যান জানান, রিটার্ন জমা না দেওয়া ব্যক্তিদের (নন-ফাইলার) করের আওতায় আনতে কমিশনারেটগুলোকে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হবে। তিনি বলেন, কর কর্মকর্তাদের জন্য নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হবে, যাতে নন-ফাইলারদের কাছ থেকে কর সংগ্রহের অগ্রগতি মূল্যায়ন করা যায়। একই সঙ্গে, করছাড় পাওয়া ব্যক্তিদের (রিবেটার) কাছ থেকেও কর সংগ্রহের অগ্রগতি মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আবদুর রহমান খান উল্লেখ করেন, বর্তমানে এনবিআরের ৯২ শতাংশ রাজস্ব টিডিএসসহ বিভিন্ন স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে আসে এবং মাত্র ৮ শতাংশ রাজস্ব সরাসরি কর কর্মকর্তারা সংগ্রহ করেন। এই ব্যবস্থায় কর কর্মকর্তাদের দক্ষতা যাচাইয়ের সুযোগ তৈরি হবে। তিনি আরও বলেন, করছাড়ের কারণে বিপুল অঙ্কের রাজস্ব হারাতে হচ্ছে, যা সরকারকে অভ্যন্তরীণ ও বহির্বাণিজ্যিক ঋণের বোঝা মোকাবিলা করতে বাধাগ্রস্ত করছে। অতীতের অনেক করছাড় যথাযথ নীতিমালা মেনে দেওয়া হয়নি বলেও তিনি মন্তব্য করেন। তিনি জানান, নতুন করছাড় নীতি অনুযায়ী, এই সিদ্ধান্ত সংসদের হাতে থাকবে এবং এর মাধ্যমে করছাড় ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা আনা সম্ভব হবে। এনবিআর চেয়ারম্যান আরও জানান, আসন্ন বাজেটে ব্যবসা সহজীকরণের দিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে। তবে একই সঙ্গে রাজস্ব আহরণ নিশ্চিত করতেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মাসরুর রিয়াজ এবং স্নেহাশীষ মাহমুদ অ্যান্ড কোম্পানির অংশীদার স্নেহাশীষ বড়ুয়া। প্রবন্ধে রাজস্ব খাতের বর্তমান অবস্থা এবং তা উন্নয়নের সম্ভাব্য কৌশল নিয়ে আলোচনা করা হয়। অনুষ্ঠানে বক্তারা রাজস্ব নীতিমালায় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা, ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার এবং বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরির ওপর জোর দেন। এনবিআরের নতুন উদ্যোগগুলো দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন তারা।