রাজউকের পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারসংক্রান্ত প্রতিবেদন জমার তারিখ পিছিয়ে আগামী ১৮ মে নির্ধারণ করা হয়েছে। রোববার (৪ মে) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালতে নির্ধারিত দিনে পুলিশ প্রতিবেদন জমা দিতে না পারায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম। এর আগে গত ১০ এপ্রিল, পূর্বাচল প্রকল্পে ছয়টি প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে দায়ের করা মামলার ভিত্তিতে আদালত শেখ হাসিনা এবং পুতুলসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। মামলার অভিযোগে বলা হয়, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল ঢাকায় রাজউকের অধীন আবাসন সুবিধা থাকা সত্ত্বেও তা গোপন করে পূর্বাচলের ২৭ নম্বর সেক্টরে একটি প্লট বরাদ্দ নেন। অভিযোগে আরও বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করে এ বরাদ্দে প্রভাব খাটিয়েছেন। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) জানায়, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা ছয় মামলার সবকটিতেই অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। এসব মামলায় শেখ হাসিনার সঙ্গে তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, বোন শেখ রেহানা, ভাগ্নি ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক, ভাগ্নি আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তী এবং ভাগ্নে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের নামও রয়েছে। দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া কর্তৃক দায়ের করা এই মামলাগুলো দণ্ডবিধির একাধিক ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭-এর আওতায় আনা হয়েছে। মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে পুতুলের নামে প্লট বরাদ্দ দিয়ে নিজেদের এবং অন্যদের লাভবান করেছেন, যা ঘুষ লেনদেনের মাধ্যমে সংঘটিত হয়েছে। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট, গণ আন্দোলনের চাপে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতা ছাড়ে এবং তিনি ভারতে চলে যান। এরপর থেকেই পূর্বাচল প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগে দুদক তদন্ত শুরু করে। তদন্ত শেষে গত ১০ মার্চ অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়, যেখানে শুরুতে ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা থাকলেও পরে আরও দুজনের নাম যুক্ত করা হয়। দুদক জানিয়েছে, যেসব আসামি অনিয়মে সরাসরি জড়িত এবং স্থায়ীভাবে অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে তদন্ত ও বিচারিক কার্যক্রমে যাতে সাধারণ শিক্ষার্থী বা নাগরিক ক্ষতিগ্রস্ত না হন, সেদিকেও বিশেষ নজর দেওয়া হবে।