বাংলাদেশ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) রাজস্ব কর্মকর্তা (আরও) এবং সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তারা (এআরও) তাদের পুরোনো ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পদবি—‘ইন্সপেক্টর’ এবং ‘সুপারিনটেনডেন্ট’ পুনর্বহালের জন্য সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন। মাঠপর্যায়ে বিদেশি সংস্থার সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে বর্তমান পদবির কারণে পরিচয় সংকটে পড়তে হচ্ছে, যা পেশাগত কর্মক্ষেত্রে বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। রবিবার দুপুরে এনবিআরের চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খানের কাছে এ বিষয়ে একটি লিখিত আবেদন পেশ করেন বাংলাদেশ কাস্টমস অ্যান্ড ভ্যাট অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাকাএভ) নেতারা। এনবিআর কার্যালয়ে গিয়ে তারা নিজেদের দাবি ও সমস্যাগুলো তুলে ধরেন। চিঠিতে স্বাক্ষর করেন বাকাএভের সভাপতি কে এম মাহবুব আলম এবং মহাসচিব তানভীর আহমেদ। এ সময় এনবিআরের কয়েকজন সদস্যও উপস্থিত ছিলেন। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ২০১০-১১ অর্থবছরে এনবিআরের রাজস্ব কর্মকর্তাদের ঐতিহ্যবাহী পদবি ‘ইন্সপেক্টর’ ও ‘সুপারিনটেনডেন্ট’ বদলে যথাক্রমে সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা (এআরও) ও রাজস্ব কর্মকর্তা (আরও) করা হয়। কিন্তু এই নতুন পদবি মাঠপর্যায়ে কাজের ক্ষেত্রে পরিচয় সংকট তৈরি করছে। বিশেষ করে, বিদেশি সংস্থা ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে কাজ করার সময় এই সমস্যা প্রকট হয়ে ওঠে। কারণ, আন্তর্জাতিকভাবে কাস্টমসের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা ‘ইন্সপেক্টর’ এবং ‘সুপারিনটেনডেন্ট’ পদবিতেই পরিচিত। বাকাএভের সভাপতি কে এম মাহবুব আলম জানান, বর্তমান পদবি শুধু বিদেশি সংস্থার সঙ্গে কাজের ক্ষেত্রেই নয়, দেশীয় কাজেও ব্যাঘাত সৃষ্টি করছে। আরও এবং এআরও পদবি অনেক সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রেও ব্যবহৃত হয়, যা বিভ্রান্তি তৈরি করে। এ কারণেই পুরোনো এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পদবি পুনর্বহাল করার দাবি জানানো হয়েছে। চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, পার্শ্ববর্তী দেশগুলো—ভারত, নেপাল, ভুটান এবং মিয়ানমারসহ অন্যান্য দেশের কাস্টমস কর্মকর্তারা ‘ইন্সপেক্টর’ ও ‘সুপারিনটেনডেন্ট’ পদবিতে কাজ করেন। সীমান্ত, সমুদ্রগামী জাহাজ বা বিমানবন্দরে দায়িত্ব পালনকালে এনবিআরের কর্মকর্তারা এই পরিচয় সংকটের কারণে সমস্যায় পড়েন। বিদেশি জাহাজের ক্যাপ্টেন বা বিমানের পাইলটের কাছে এই পদবি পরিচিত না হওয়ায় তাদের সঙ্গে কার্যকর সমন্বয় করা কঠিন হয়ে পড়ে। বাকাএভের দাবি, ‘ইন্সপেক্টর’ ও ‘সুপারিনটেনডেন্ট’ পদবি বিশ্বের প্রায় সব দেশেই কাস্টমস বিভাগের গৌরবময় ঐতিহ্য হিসেবে বিবেচিত। এটি শুধু আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নয়, বরং পেশাগত মর্যাদার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই পদবি পুনর্বহাল করতে সরকারের কোনো আর্থিক ব্যয়ও হবে না। রাজস্ব কর্মকর্তারা আশা করছেন, এনবিআর চেয়ারম্যান ও সরকার তাদের দাবিটি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে দ্রুত পদবি পুনর্বহালের পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।