ঢাকা শিক্ষাবোর্ড ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্রী আনিসা আহমেদ সম্প্রতি এক হৃদয়বিদারক ঘটনায় পরীক্ষার সুযোগ হারিয়েছেন। তার মায়ের মেজর স্ট্রোক হওয়ায় পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছাতে দেড় ঘণ্টা লেগেছে এবং গেট বন্ধ হওয়ার পর তাকে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরে এসে আনিসা শেষ পর্যন্ত কান্নায় ভেঙে পড়েন।
২৬ জুন, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় সারাদেশে একসাথে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়। আনিসার পরীক্ষাকেন্দ্র ছিল ঢাকা শহরের সরকারি মিরপুর বাঙলা কলেজ, কিন্তু তার মায়ের অসুস্থতার কারণে তাকে কেন্দ্রে পৌঁছানোর জন্য নির্দিষ্ট সময়ে প্রস্তুতি নিতে পারেনি। এ কারণে তাকে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ শেষ পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ঘটনার ওপর আলোচনা জোরদার হয়। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর, অনেকের মধ্যে ক্ষোভ প্রকাশ ও আক্ষেপ দেখা দেয় যে, মানবিক কারণে পরীক্ষা নেওয়ার সুযোগ দেওয়া উচিত ছিল।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে আইনগত সহায়তা নিয়ে অগ্রসর হয়েছেন বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের নেতা ও সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল। তিনি জানান, আনিসার বিষয়ে তিনি ব্যক্তিগতভাবে কাজ করছেন এবং তার পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। রাত ১২টার দিকে তিনি তার ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট করেন, যেখানে আনিসার অসুস্থ মায়ের চিকিৎসা, আনিসার একমাত্র অবলম্বন হিসেবে দায়িত্ব পালন এবং পরীক্ষায় অংশগ্রহণের বিষয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, আনিসার স্কুল ও কলেজের শিক্ষকেরা পূর্ণ সমর্থন দিচ্ছেন এবং তার পরীক্ষাটি বিশেষ বিবেচনায় পরে নেওয়ার চেষ্টা করা হবে।
রুহুল কুদ্দুস কাজল আরও বলেছেন, তিনি আনিসা ও তার মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন এবং আইনগত সহায়তা দিতে প্রস্তুত রয়েছেন। তিনি আরও উল্লেখ করেন, ২০০০ সালে মতিঝিল মডেল স্কুলের ১৩২ শিক্ষার্থীর পরীক্ষা দেওয়ার একটি পূর্বের মামলার উদাহরণ তুলে ধরা হয়েছে, যা এই ধরনের মানবিক পরিস্থিতিতে সহযোগিতা পাওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি করতে পারে।
এদিকে আনিসার পরিবার জানিয়েছে, তার বাবার মৃত্যু হয়েছে দুই বছর আগে এবং তার মায়ের মেজর স্ট্রোক হয়েছে, ফলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছাতে দেরি হয়। তবে, আনিসার পরীক্ষার পরবর্তী ব্যবস্থা সম্পর্কে আলোচনা চলছে এবং আশা করা হচ্ছে যে, মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে তার জন্য সমাধান আসবে।
এটি এমন একটি ঘটনা, যেখানে একজন শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন চালিয়ে যাওয়ার জন্য সামাজিক ও আইনি সহায়তা দেওয়া সম্ভব।