জামায়াতে ইসলামী আজ (১৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মগবাজারে আল-ফালাহ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কর্মসূচি ও দাবি তুলে নিয়ে গণদাবি ঘোষণা করেছে। দলের মুখপাত্র সৈয়দ আব্দুল্লাহ তাহের জানান, সংগঠনটি লক্ষ করে চলমান রাজনৈতিক সংকটকে বাতিল করে দেশের জন্য একটি জবাবদিহিমূলক ও ন্যায়ভিত্তিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনই তাদের উদ্দেশ্য। এজন্য তারা ব্যাপক গণআন্দোলনসহ নির্দিষ্ট রাষ্ট্রগত পরিবর্তন দাবী করেছে। সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের দাবি, আগামী ফেব্রুয়ারিতে জুলাই জাতীয় সনদকে মূল ভিত্তি করে নির্বাচন আয়োজিত হলে তা হবে সর্বোত্তম উপায়—এমন বিশ্বাস ব্যক্ত করেন নেতারা। দলটি বলেছেন, জনগণের আপোষহীন দাবি আদায়ের জন্য গণআন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই; তাই এ মুহূর্তে তারা আন্দোলনকে প্রধান পথ হিসেবে দেখছে। অন্যদিকে দলটি নির্বাচনী সংস্কারের কাঁধে পিআর (সংখ্যানুপাতিক) পদ্ধতিকে গুরুত্ব দিতে বলেছে এবং বলেছে, আগামি জাতীয় নির্বাচনে সংসদের উভয় কক্ষে পিআর চালু করা হলে ভোটের স্বীকৃতি ও বহুমাত্রিক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হবে। পাশাপাশি তারা নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করার লক্ষ্যে ‘সমস্ত প্রার্থীর জন্য সমান লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ গঠন করতে সরকারি ও নির্বাচন কমিশন উভয়কেই জোরদারভাবে আহ্বান জানিয়েছে। দলটি আরও দাবি করেছে, তারা দেশের ইতিহাসে সংঘটিত প্রকাশ্য নিপীড়ন, নির্যাতন, দুর্নীতি ও মানবধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোর বিরুদ্ধে যার যার দায়-দায়িত্ব অনুযায়ী বিচার দেখতে চায়—এ ধরনের মামলাসমূহ দ্রুত ও দৃশ্যমানভাবে বিচার হওয়া উচিত বলে মনে করে জামায়াত। পাশাপাশি তারা বলেছে, যারা স্বৈরাচারের সহায়ক হিসেবে কাজ করেছে তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম সীমিত বা নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন। সংবাদ সম্মেলনে সৈয়দ আব্দুল্লাহ তাহের বলেন, ‘‘আমরা আজ জাতির সামনে আন্দোলনের পাঁচ দফা তুলে ধরছি—এগুলি কেবল দলীয় নয়, বরং জাতীয় স্বার্থে নেওয়া পদক্ষেপ। জনগণের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়িত না হলে, জনগণই ইতিহাস রচনা করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’’ তিনি দাবি করেন, এসব দাবি বাস্তবায়িত না হলে দলের পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট কর্মসূচি নেওয়া হবে। ঘোষিত দাবিগুলো রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তুমুল বিতর্কে উসকে দিতে পারে—কেননা এতে নির্বাচন ব্যবস্থার মূল কাঠামো, বিচারের অনুষঙ্গ ও রাজনৈতিক দলগুলোর কার্যক্রমকেও যথেষ্টভাবে স্পর্শ করা হয়েছে। এখন প্রশ্ন, ক্ষমতাসীন ও অন্যান্য রাজনৈতিক শক্তি এসব দাবি গ্রহণ করবে কি না; নাহলে এগুলো কিভাবে বাস্তবায়িত হবে—এসবই আগামী সময়ের রাজনৈতিক টানাপোড়েন নির্ধারণ করবে।