ব্যাংক খাতে ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের বিপরীতে মূলধন সংরক্ষণে বা মূলধন পর্যাপ্ততায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সর্বনিম্নে। ২০২২-এর তুলনায় ২০২৩ সালে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর ব্যাংক খাতে মূলধন পর্যাপ্ততা বাড়লেও শুধু বাংলাদেশের কমেছে। ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের বিপরীতে মূলধন সংরক্ষণের হার কমার কারণে ব্যাংকগুলো দুর্বল হয়েছে।
এদিকে অর্থনৈতিক দেউলিয়াত্ব থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে শ্রীলংকা। দেশটির ব্যাংক খাত এখন মূলধন রাখার ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষে অবস্থান করছে।
রোববার প্রকাশিত বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক স্থিতিশীলতা প্রতিবেদন ২০২৩ থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। প্রতিবেদনে দক্ষিণ এমিয়ার দেশগুলোর ব্যাংক খাতে ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের বিপরীতে মূলধন রাখার হার তুলে ধরা হয়েছে।
সূত্র জানায়, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরে ব্যাংক খাতে বড় ধরনের লুটপাট হয়েছে। ঋণের নামে ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে আর ফেরত দেওয়া হয়নি। এমনকি বেশ কিছু অর্থ আমদানির নামে বিদেশে পাচার করা হয়েছে। এতে ব্যাংক খাত দুর্বল হয়ে পড়েছে। যে কারণে ব্যাংকগুলোর আয় কমেছে। ফলে মূলধন বাড়াতে পারেনি।
প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, মূলধন পর্যাপ্ততায় বাংলাদেশের অবস্থান সর্বনিুে রয়েছে। ২০২২-এর তুলনায় ২০২৩ সালে বাংলাদেশের ব্যাংক খাতে মূলধন পর্যাপ্ততার হার কমেছে। ২০২১ সালে বাংলাদেশের ব্যাংক খাতে মূলধন পর্যাপ্ততা ছিল ১১ দশমিক ০৮ শতাংশ। ২০২২ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১১ দশমিক ৮৩ শতাংশে। ২০২৩ সালে তা আবার কমে দাঁড়ায় ১১ দশমিক ৬৪ শতাংশ। ২০২২ সালে ভারতের মূলধন পর্যাপ্ততা ছিল ১৬ শতাংশ, ২০২৩ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১৬.৮ শতাংশে।
তীব্র অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে থেকেও শ্রীলংকা ও পাকিস্তানের ব্যাংকগুলোর মূলধন পর্যাপ্ততা বেড়েছে। পাকিস্তানের মূলধন পর্যাপ্ততা ২০২২ সালে ছিল ১৬ দশমিক ৬ শতাংশ। ২০২৩ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬ দশমিক ৭ শতাংশ। একই সময়ে শ্রীলংকার ব্যাংকগুলোর মূলধন পর্যাপ্ততা ১৫ দশমিক ৩ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৬ দশমিক ৯ শতাংশ হয়েছে। মূলধন সংরক্ষণের হারে শ্রীলংকা শীর্ষে উঠে এসেছে। গত ৫ বছরের তুলনায় ভারত ও পাকিস্তানের ব্যাংকগুলোর মূলধন পর্যাপ্ততা বেড়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের মূলধন পর্যন্ত ৫ বছর ধরে একই বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছে।