ভারতের আদানি পাওয়ারসহ বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে বিদ্যুৎ সরবরাহ সংক্রান্ত ১১টি চুক্তি খতিয়ে দেখবে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিভাগের চুক্তি পর্যালোচনায় গঠন করা জাতীয় রিভিউ কমিটি।
বৃহস্পতিবার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়ে বলা হয়, কমিটি ১১টি বিদ্যুৎকেন্দ্র সম্পর্কিত সব নথিপত্র তলব করেছে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০ (সংশোধিত ২০২১) এর অধীন সম্পাদিত চুক্তিগুলো পর্যালোচনায় এ কমিটি গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। যেসব বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুক্তি পর্যালোচনা করা হচ্ছে এর সবগুলোই বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় হয়েছে।
বৃহস্পতিবার এ কমিটিতে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিদের অভিযোগ জমা দিতে একটি গণবিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করেছে সরকার।
পর্যালোচনার আওতায় আসা এসব চুক্তিতে রাষ্ট্রীয় স্বার্থ ক্ষুণ্ণ করে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার তাদের আস্থাভাজন ও সুবিধাভুগীদের অধিক মুনাফার সুযোগ করে দেয় বলে বিশেষজ্ঞরা অভিযোগ করে আসছেন।
যেসব চুক্তি পর্যালোচনা করা হচ্ছে সেখানে ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যে আদানি পাওয়ারের নির্মিত প্রায় ১৫০০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন গোড্ডা পাওয়ার প্লান্টও রয়েছে।
আদানির সঙ্গে এ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি কখনও উন্মুক্ত করেনি সরকার। তবে আদানি থেকে কেনা বিদ্যুতের দাম কখনও কখনও ভারত থেকে জিটুজি ভিত্তিতে কেনা বিদ্যুতের চেয়ে দ্বিগুণ বলে সমালোচনাকারীরা বলে আসছেন।
পর্যালোচনার তালিকায় রয়েছে সামিট গ্রুপের মেঘনাঘাট ৫৮৩ মেগাওয়াট ও কড্ডা ৩০০ মেগাওয়াট, প্যারামাউন্ট গ্রুপের বাঘাবাড়ি ২০০ মেগাওয়াট, সাবেক চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজের মালিকানাধীন পটুয়াখালী ১০০ মেগাওয়াট, ওরিয়ন গ্রুপের মোংলা ১০০ মেগাওয়াট, মিডল্যান্ড পাওয়ার কোম্পানির আশুগঞ্জ ১৫০ মেগাওয়াট, আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি তাহ্জীব আলম সিদ্দিকীর মালিকানাধীন ডরিন পাওয়ারের মানিকগঞ্জ ১৬২ মেগাওয়াট, বেক্সিমকো গ্রুপের সুন্দরগঞ্জ ২০০ মেগাওয়াট, ইন্ট্রাকো সোলারের লালমনিরহাট ৩০ মেগাওয়াট এবং যৌথ মালিকানার কোম্পানির এইচডিএফসি সিন-পাওয়ারের সুতিয়াখালী ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সরকার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার গত ৫ সেপ্টেম্বর বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০ এর অধীন সম্পাদিত চুক্তিগুলো পর্যালোচনায় এ জাতীয় কমিটি গঠন করে।