গোপালগঞ্জে এনসিপির কর্মসূচিতে সহিংসতা: চারজন নিহত, কারফিউ জারি গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের হামলার পর পরিস্থিতি থমথমে হয়ে উঠেছে। সাধারণ মানুষের মধ্যে অজানা আতঙ্ক বিরাজ করছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে তিন ঘণ্টা বিরতি দিয়ে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়েছে। পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনী পুরো গোপালগঞ্জে টহল দিচ্ছে, এবং হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে যৌথ বাহিনীর অভিযান চলছে। এ ঘটনায় ২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তবে গুলিতে নিহত চারজনের সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত হয়নি। রাতেই তাদের দাফন ও সৎকার সম্পন্ন হয়েছে। গত ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশ কেন্দ্রিক সংঘর্ষের ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমেদ গোপালগঞ্জ পরিদর্শন করেছেন এবং কারফিউর সময় বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা পর্যন্ত কারফিউ কার্যকর থাকবে, এরপর কিছু সময়ের জন্য শিথিল করা হবে। ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক জানিয়েছেন, গোপালগঞ্জে সহিংসতার ঘটনায় কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যদি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করে থাকে, তবে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। গোপালগঞ্জের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি তুলে ধরে বাংলাদেশ পুলিশ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এনসিপির ‘জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জে সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশের নিরাপত্তার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর ছিল, কিন্তু নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের সদস্যরা হামলা চালায়। সংঘর্ষের ফলে চারজন নিহত হন এবং প্রায় অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়। এখন পর্যন্ত যৌথ বাহিনী ও পুলিশ নাশকতার ঘটনার সঙ্গে জড়িত ২০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। গোপালগঞ্জ জেলার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষার্থে ১৫০৭ জন পুলিশ সদস্যসহ সেনাবাহিনী ও বিজিবি মোতায়েন রয়েছে। জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্থানীয় প্রশাসন কারফিউ জারি করেছে, যা সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।