জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ‘জুলাই জাতীয় সনদ’ বাস্তবায়ন সংশ্লিষ্ট সুপারিশে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছে বিএনপি। দলটির শীর্ষ নেতারা বলছেন, এই সুপারিশ জাতীয় ঐক্যের পরিবর্তে দেশে অনৈক্য সৃষ্টি করতে পারে এবং কমিশন তার মাধ্যমে ‘জাতীয় অনৈক্য’ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে। বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ কমিশনের সুপারিশকে কটাক্ষ করে সাংবাদিকদের বলেন, জাতীয় ঐকমত্যের পরিবর্তে এটি যেন জাতীয় অনৈক্যের নতুন দিক উন্মোচন করেছে। একইসঙ্গে তিনি জানান, সুপারিশে জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষরিত সিদ্ধান্তের বাইরে অতিরিক্ত কিছু আদেশ সংযুক্ত করা হয়েছে, যা দলটির কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। বিশেষত, নোট অব ডিসেন্ট বা ভিন্নমতাবলম্বী দলের মতামতের উল্লেখ বাদ দেওয়া হয়েছে, যা বিস্ময়কর ও প্রশ্নবিদ্ধ। দলের আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটের প্রস্তাব অবান্তর এবং বিএনপি এই প্রস্তাবে একমত নয়। তার মতে, নির্বাচনের দিন দুইটি আলাদা ব্যালটে নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠিত হওয়াই একমাত্র গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি, যা বিএনপি শুরু থেকেই দাবি করে আসছে এবং এই অবস্থান অটুট থাকবে। গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুকের সঙ্গে বৈঠক শেষে আমীর খসরু বলেন, জুলাই সনদ নিয়ে নতুন করে কোনো আলোচনা বা পরিবর্তনের সুযোগ নেই। বিএনপি তাদের অবস্থান থেকে একচুলও নড়বে না। অন্যদিকে, সচিবালয়ে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের সঙ্গে বৈঠকের পর সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, কমিশনের সুপারিশ সরকারের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে এবং কমিশনকে শুধু ধন্যবাদই নয়, দু’বার ধন্যবাদ দিতে হয়—প্রথমত, তারা তাদের কার্যক্রম শেষ করতে পেরেছেন, দ্বিতীয়ত, তারা জাতীয় ঐকমত্যের বদলে জাতীয় অনৈক্য তৈরি করার পথ বেছে নিয়েছেন। তিনি বলেন, জুলাই সনদে মোট ৮৪টি দফা ছিল, যেখানে বিভিন্ন দলের ভিন্নমত ও নোট অব ডিসেন্ট স্পষ্টভাবে উল্লেখ ছিল। কিন্তু কমিশনের সুপারিশে এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো একেবারেই উপেক্ষিত হয়েছে। সর্বোপরি, বিএনপির স্পষ্ট অভিযোগ—কমিশনের সুপারিশে তাদের মৌলিক আপত্তি ও অবস্থান উপেক্ষিত হয়েছে এবং এতে দেশে ঐক্যের পরিবর্তে বিভাজনের নতুন দ্বার উন্মোচিত হচ্ছে। সংবাদ প্রতিবেদনটি মূলত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ ও বিএনপির প্রতিক্রিয়া ঘিরে প্রস্তুত করা হয়েছে, যেখানে দলীয় নেতাদের বক্তব্য ও উদ্বেগ গুরুত্ব পেয়েছে।