আজ ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সময় : রাত ১২:১৩

বার : শনিবার

ঋতু : গ্রীষ্মকাল

আবারও পতনের ধারায় ফিরলো শেয়ার বাজার

আবারও পতনের ধারায় ফিরলো শেয়ার বাজার

আস্থা বাড়াতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হলেও ছোটখাটো গুজবের কারণে পতন হচ্ছে দেশের শেয়ার বাজারে। আগের সপ্তাহে শেয়ার দর অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় কিছু কোম্পানির বিরুদ্ধে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা-বিএসইসি তদন্ত কমিটি গঠন করবে, এমন খবরে  শেয়ার বাজারে দরপতন ঘটে। যদিও তদন্ত কমিটি গঠনের কোনও সত্যতা পাওয়া যায়নি।

অবশ্য গেলো সপ্তাহে তেমন কোনও গুজব ছিল না। তবু পতনের ধারা থেকে বের হতে পারেনি শেয়ার বাজার। তথ্য বলছে, আগের সপ্তাহে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বাজার মূলধন বেড়েছিল ২ হাজার ৬১৭ কোটি টাকা। গত সপ্তাহে বাজার মূলধন কমেছে দুই হাজার ৮২৯ কোটি টাকা।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, মূলধন কমা ছাড়াও সপ্তাহজুড়ে সূচকের পতনের পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেন কমেছে। একই সঙ্গে ডিএসইর মৌলভিত্তির ‘এ’ শ্রেণিভুক্ত ভালো কোম্পানিগুলোর লেনদেনও কমেছে। তবে অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেন বেড়েছে ১২৫ কোটি ২৪ লাখ ৩৪ হাজার ৩৮ টাকা।

অবশ্য আগের সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছিল ২ হাজার ৬১৭ কোটি টাকা। তার আগের সপ্তাহে অর্থাৎ দুই সপ্তাহ আগে বাজার মূলধন কমেছিল ২ হাজার ৫৩৮ কোটি টাকা।  তার আগের টানা চার সপ্তাহে বাজার মূলধন বাড়ে ১৯ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা।

বাজারের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, গত সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৫১ দশমিক ১১ পয়েন্ট। আগের সপ্তাহে সূচকটি বেড়েছিল ৪৮ দশমিক ৯৯ পয়েন্ট।

আর বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক গত সপ্তাহে কমেছে ৩৫.২৭ পয়েন্ট। আগের সপ্তাহে সূচকটি বেড়েছিল ১৯ দশমিক ৩৩ পয়েন্ট ।

এছাড়া গত সপ্তাহে ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ সূচক কমেছে ১৭ পয়েন্ট। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি বেড়েছিল ৭ দশমিক ১৭ পয়েন্ট।

বাজারের তথ্য বলছে, বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৮৬টি প্রতিষ্ঠান শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ৬১টির, কমেছে ১৭৩টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৫২টির শেয়ার ও ইউনিট দর।

বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইর সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) পৌনে এক শতাংশ বেড়েছে। গত সপ্তাহের শুরুতে ডিএসইর পিই ছিল ১৪.৭৯ পয়েন্টে, যা সপ্তাহ শেষে ১৪.৯১ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে পিই রেশিও ০.১২ পয়েন্ট বা ০.৮১ শতাংশ বেড়েছে।

বাজারের তথ্য বলছে, সপ্তাহজুড়ে ভালো কোম্পানির শেয়ার ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকার কারণে এ ক্যাটাগরি শেয়ারের লেনদেন কমেছে। দেখা যাচ্ছে, গত দুই মাস ধরে ব্যাংক, বিমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মতো ভালো কোম্পানির শেয়ার ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকায় ক্রেতাশূন্য হয়ে পড়েছে। বাজারে ক্রেতা না থাকায় ভালো শেয়ারের লেনদেন কমেছে।

বাজার বিশ্লেষণ দেখা যায়, গত সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি লেনদেন কমেছে ভালো মানের কোম্পানির। ভালো মৌলভিত্তির ‘এ’ শ্রেণিভুক্ত কোম্পানিগুলোর সম্মিলিত লেনদেন গত দুই সপ্তাহে  ৩৮১ কোটি ৩ লাখ ৩৬ হাজার টাকা কমে গেছে। গত সপ্তাহে ‘এ’ ক্যাটাগরির শেয়ার লেনদেন হয়েছে পাঁচ হাজার ৩৬৩ কোটি ২৪ লাখ ৩১ হাজার টাকা। আর এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল সাত হাজার ৭৫৪ কোটি ২৭ লাখ ৬৭ হাজার টাকা।

বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে ৭ হাজার ৩০৬ কোটি ১৭ লাখ ৬৭ হাজার ১৬৪ টাকার লেনদেন হয়েছে। আর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ১০ হাজার ১১০ কোটি ৩৯ লাখ ০৮ হাজার ৭৮৯ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেন দুই হাজার ৮০৪ কোটি ২১ লাখ ৪১ হাজার ৬২৫ টাকা কমেছে।

বিদায়ী সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস লেনদেন শুরুর আগে ডিএসইতে বাজার মূলধন ছিল ৫ লাখ ২২ হাজার ৭৪৩ কোটি ৯৯ লাখ ২৩ হাজার ৪৭ টাকা। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে লেনদেন শেষে বাজার মূলধন দাঁড়ায় ৫ লাখ ১৯ হাজার ৯১৪ কোটি ০৪ লাখ ৮৫ হাজার ৫ টাকায়। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন দুই হাজার ৮২৯ কোটি ৯৪ লাখ ৩৮ হাজার ৪২ টাকা কমেছে।

অপর শেয়ার বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ৫৩৪ কোটি ১৬ লাখ ৭০ হাজার ৬৫৬ টাকার। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৪০৮ কোটি ৯২ লাখ ৩৬ হাজার ৬১৯ টাকার। অর্থাৎ এক সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে লেনদেন ১২৫ কোটি ২৪ লাখ ৩৪ হাজার ০৩৮ টাকা বেড়েছে। গত সপ্তাহে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৫৫.৫৮ পয়েন্ট বা ০.৮০ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৯ হাজার ১৮৯.২৮ পয়েন্টে। সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে ৩১৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৫৯টির দর বেড়েছে, ১২৬টির কমেছে এবং ১৩২টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     More News Of This Category