সঞ্চয়ের নিরাপদ মাধ্যম হিসেবে প্রাইজবন্ড দীর্ঘদিন ধরে মধ্যবিত্ত ও বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের কাছে জনপ্রিয়। মাত্র ১০০ টাকার প্রাইজবন্ড কিনে সর্বোচ্চ ৬ লাখ টাকা জেতার সুযোগ থাকায় এটি অনেকের কাছে আকর্ষণীয় একটি বিনিয়োগ মাধ্যম।
প্রাইজবন্ড কী?
প্রাইজবন্ড হলো গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পরিচালিত একটি বিনিয়োগ প্রকল্প। বিনিয়োগকারী যে কোনো সময় প্রাইজবন্ড কিনতে পারেন এবং প্রয়োজনে তা ভেঙে নগদ অর্থ উত্তোলন করতে পারেন। এই প্রকল্পে সুদ বা মুনাফা প্রদান করা হয় না। তবে প্রতি তিন মাস অন্তর লটারির মাধ্যমে বিজয়ীদের জন্য পুরস্কার নির্ধারণ করা হয়।
কখন ড্র হয়?
ড্র অনুষ্ঠিত হয় প্রতি বছর ৩১ জানুয়ারি, ৩০ এপ্রিল, ৩১ জুলাই ও ৩১ অক্টোবর। নির্ধারিত তারিখে সরকারি ছুটি থাকলে পরবর্তী কার্যদিবসে ড্র অনুষ্ঠিত হয়। তবে নতুন কেনা বন্ড দুই মাসের মধ্যে ড্রয়ের আওতায় আসে না। ড্রয়ের দিন যে বন্ডের মালিকানা থাকবে, সেই ব্যক্তি পুরস্কার জেতার যোগ্য বলে বিবেচিত হন।
কেন প্রাইজবন্ড চালু করা হয়েছে?
বাংলাদেশ সরকার অভ্যন্তরীণ সম্পদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই স্কিম চালু করে। এটি জনগণের সঞ্চয় প্রবণতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সরকারের জন্য একটি সহজ ঋণ সংগ্রহের মাধ্যম।
কেন কিনবেন প্রাইজবন্ড?
প্রাইজবন্ডে কোনো ঝুঁকি নেই। এটি যে কোনো সময় ভাঙানো যায় এবং সহজে হস্তান্তরযোগ্য। ব্যাংকে সঞ্চয় করলে বা অন্য বিনিয়োগে মূলধন সহজে উত্তোলন করা সম্ভব নয়। কিন্তু প্রাইজবন্ড দিয়ে তাৎক্ষণিক নগদ অর্থ তোলা যায়।
কোথা থেকে কিনবেন?
প্রাইজবন্ড বাংলাদেশ ব্যাংকের (ময়মনসিংহ ছাড়া সব অফিস), তফসিলি ব্যাংক (শরীয়াহভিত্তিক ব্যাংক ব্যতীত), জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের সঞ্চয় ব্যুরো অফিস এবং ডাকঘর থেকে কেনা বা ভাঙানো যায়।
পুরস্কার ব্যবস্থা
প্রাইজবন্ডের প্রতিটি সিরিজে মোট ৪৬টি পুরস্কার রয়েছে। প্রথম পুরস্কার বিজয়ী ৬ লাখ টাকা, দ্বিতীয় পুরস্কার ৩ লাখ ২৫ হাজার, তৃতীয় পুরস্কার ১ লাখ টাকা (২ জন), চতুর্থ পুরস্কার ৫০ হাজার টাকা (২ জন), এবং পঞ্চম পুরস্কার ১০ হাজার টাকা (৪০ জন) পান।
পুরস্কার দাবির নিয়ম
ড্রয়ের তারিখ থেকে দুই বছরের মধ্যে পুরস্কার দাবি করতে হয়। পুরস্কার বিজয়ীরা বাংলাদেশ ব্যাংক, তফসিলি ব্যাংক, সঞ্চয় ব্যুরো বা ডাকঘরে নির্ধারিত ফরম পূরণ করে পুরস্কার নিতে পারেন। তবে ২০ শতাংশ উৎসে কর কর্তন করা হয়।
প্রাইজবন্ড মেলানো যায় অনলাইনেই
প্রাইজবন্ড মেলানোর ডিজিটাল পদ্ধতি হাতের নাগালেই। অনলাইন ও অ্যাপ ব্যবহার করে সহজেই মেলাতে পারবেন প্রাইজবন্ডের ফল। ব্যস্ততার কারণে অনেকেই সংগ্রহে থাকা প্রাইজবন্ডের ড্রর ফল মেলানোর সময় পান না। প্রতি তিন মাস পরপর ড্রর ফল দেখা ও মেলানো কঠিন। এতে অনেকেই পুরস্কার জিতেছেন কি না, তা জানতে পারেন না।
অনলাইনে মেলানোর জন্য এই ওয়েবসাইটে যেতে হবে আর অ্যাপ ডাউনলোড করা যাবে এখান থেকে। স্মার্ট সঞ্চয়ের মাধ্যম হিসেবে প্রাইজবন্ড ঝুঁকিমুক্ত এবং লাভজনক হতে পারে। বিনিয়োগ পরিকল্পনায় এটি মধ্যবিত্তের জন্য একটি উপযুক্ত পছন্দ।