আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এটি ঢাকা ও নয়াদিল্লির মধ্যে প্রথম উচ্চ পর্যায়ের সরকারি বৈঠক হতে যাচ্ছে।
পররাষ্ট্র দপ্তরের এই আলোচনায় বাংলাদেশ পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন এবং ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি নেতৃত্ব দেবেন বলে একজন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বৈঠকের জন্য প্রয়োজনীয় এজেন্ডা প্রস্তুত করছে এবং এ বিষয়ে আজ বুধবার আন্তঃমন্ত্রণালয় প্রস্তুতিমূলক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন ওই কর্মকর্তা।
বৈঠকে বিদ্যমান চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক এবং আগের বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্তগুলোর অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করা হবে।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক কিছুটা টানাপোড়েনের মধ্যে রয়েছে, বিশেষ করে ভারতের পক্ষ থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার ঘটনায়।
১৭ নভেম্বর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুস বলেছেন, শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়ার বিষয়ে ঢাকা নয়াদিল্লির কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করবে।
সরকার পরিবর্তনের পর ভারতীয় হাই কমিশন বাংলাদেশি পর্যটকদের ভিসা ইস্যু সীমিত করেছে।
এছাড়া, ভারতীয় লাইন অব ক্রেডিটের আওতাধীন অনেক প্রকল্প বন্ধ রয়েছে, কারণ ভারতীয় ঠিকাদাররা নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগের কারণে বাংলাদেশে ফিরে আসেননি।
এদিকে, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন জানিয়েছেন, ঢাকায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নয়াদিল্লির সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক পুনর্মূল্যায়ন করা হবে।
অস্থায়ী সরকারের উপদেষ্টারা উল্লেখ করেছেন, ভারতীয় কিছু গণমাধ্যম বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনা অতিরঞ্জিতভাবে উপস্থাপন করছে, যা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জন্য ইতিবাচক নয়।
দক্ষিণ এশীয় বিষয়ক বিশেষজ্ঞ এবং ভারতের হরিয়ানাভিত্তিক ওপি জিন্দাল গ্লোবাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত দ্য ডেইলি স্টারকে বলেছেন, দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে যত দ্রুত সম্ভব উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হওয়া উচিত।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন এবং ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সাইডলাইনে সাক্ষাৎ করেছেন।
তবে, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুস এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে বৈঠক তখন তাদের নিউইয়র্কে অবস্থান না মেলার কারণে সম্ভব হয়নি।