ঢালিউডের উঠতি তারকা, জাকিয়া কামাল মুন, সম্প্রতি এক বিপদজনক ঘটনার মধ্য দিয়ে উত্তাল হয়েছেন। তার দায়ের করা একটি প্রতারণার মামলায় জাজ মাল্টিমিডিয়ার পরিচালক আবদুল আজিজের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে—এটা যেন এক অস্বাভাবিক ঘটনাপ্রবাহ, যেখানে তারকা এবং প্রযোজক, দু’জনেই এক দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছেন।
এটা ঘটে সম্প্রতি, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি, যখন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ এহসানুল ইসলামের আদালত আবদুল আজিজের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি আদেশ দেন। এই ঘটনায় অদ্ভুত এক প্যাঁচ তৈরি হয়, যেখানে চুক্তির অঙ্গীকার এবং অর্থের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ হয়ে যায়—একটি চিত্রনাট্য, যার মধ্যে তীব্র কৌশল, দুর্নীতি এবং প্রতারণা জড়িত। মামলার নথিতে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাকিয়া কামাল মুন ‘পাপ’ সিনেমা নির্মাণের জন্য প্রযোজক আবদুল আজিজকে এককালীন ৬০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন, যদিও সেই সময়ের মধ্যেই সিনেমার কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অঙ্গীকারনামার শর্ত অনুযায়ী, টাকা ফেরত দেওয়া তো দূরের কথা, বরং বিনিয়োগকৃত টাকা থেকে কোন কিছুই মেলেনি।
এদিকে, অঙ্গীকার ভঙ্গের পর, বেশ কিছুদিন ধরে আইনজীবীর মাধ্যমে নোটিশ পাঠানোর পরও কোনো প্রতিক্রিয়া না পাওয়া, পরিস্থিতিটিকে আরও কঠিন করে তোলে। অথচ, ঘটনা এখানেই থামেনি। উল্টো, গত বছরের মে মাসে আবদুল আজিজ ‘পাপ’ ছবিটি একটি ওটিটির কাছে ১ কোটি ১০ লাখ টাকায় বিক্রি করে দেন, এমনকি সবকিছু খোলাসা হওয়ার পরও টাকা ফেরত দেওয়ার কথা অস্বীকার করেন।
এরপর, মামলার নথিতে আরও লেখা রয়েছে যে, আজিজ শুধু অস্বীকারই করেননি, বরং হুমকিও দিয়েছেন—”বেশি বাড়াবাড়ি করলে বাদীর ক্যারিয়ার ধ্বংস করে দিবেন”—এমন ভয়াবহ ভাষায়। এই পরিস্থিতি জাকিয়া কামাল মুনকে বাধ্য করেছে, সব কিছু সামনে এনে এক মামলা দায়ের করতে।
মুন বলেছেন, “আমি বারবার টাকা ফেরত চেয়েছি, তিনি দেননি। এমনকি আমার ফোনও ধরছেন না। উল্টো নানা ভয়-ভীতি দেখাচ্ছেন। তাই বাধ্য হয়েই মামলা করেছি।” তিনি যেন এক অদ্ভুত দ্বন্দ্বের মধ্যে পড়ে গেছেন, যেখানে নিজের ক্যারিয়ার এবং অর্থের প্রত্যাশার সাথে তার সৃষ্টির সঙ্গতি অনিশ্চিত।
এদিকে, আবদুল আজিজের পক্ষ থেকে কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি, তবে তার বিরুদ্ধে চলমান এই মামলাটি, যেন শুধু ব্যক্তিগত সম্পর্কের মধ্যে নয়, বরং শিল্প এবং তারকা জীবনের বাস্তব অন্ধকার দিকও প্রকাশ করে।
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালে মুক্তি পাওয়া ‘ভালোবাসার রঙ’ সিনেমার মাধ্যমে যাত্রা শুরু হয় জাজ মাল্টিমিডিয়ার। তারপর একে একে বেশ কিছু ছবি মুক্তি পেলেও, আজিজের ব্যক্তিগত জীবন এবং তার বিতর্কিত কর্মকাণ্ডই বেশি আলোচিত হয়েছে, যা কখনোই রূপালি পর্দার উজ্জ্বল আলোকে অন্ধকারে চাপিয়ে দেয়।