ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে দখলদার ইসরায়েলের হামলা ও গণহত্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে রাজধানীতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিলের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। এই প্রতিবাদী কর্মসূচি পরিচালনা করেছে দলের ঢাকা মহানগর উত্তর শাখা। সোমবার (৭ এপ্রিল) বিকেল চারটায় মহাখালীতে এক পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর, জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সেক্রেটারি মুহাম্মদ রেজাউল করিমের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি মহাখালী থেকে শুরু হয়ে নাবিস্কো হয়ে মগবাজারে এসে শেষ হয়। পথসভায় রেজাউল করিম মন্তব্য করেন, “ফিলিস্তিনের গাজায় দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর হত্যা ও নিধনযজ্ঞ আইয়্যামে জাহিলিয়াতের বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে।” তিনি বলেন, “অবৈধ রাষ্ট্র ইসরায়েল শান্তিচুক্তি ভঙ্গ করে গাজায় গণহত্যা চালিয়েছে। হাজার হাজার শিশু, নারী ও পুরুষকে হত্যা করেছে। একের পর এক যুদ্ধাপরাধ করেছে।” গাজায় গণহত্যা বন্ধে জাতিসংঘ, ওআইসি, আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহ এবং বিশ্বের শান্তিপ্রিয় মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান এই নেতা। তিনি ইসলামি রাষ্ট্রগুলোকে একত্রিত করে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থাকে (ওআইসি) অবিলম্বে বৈঠক ডাকার জন্যও আহ্বান জানান। হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে রেজাউল করিম বলেন, “অবিলম্বে গাজায় হামলা বন্ধ না হলে মুসলিম যুবক-যুবতিরা ইসরাইল অভিমুখে মার্চ করে অবৈধ ইসরাইলকে গুঁড়িয়ে দিতে বাধ্য হবে।” তিনি দখলদার ইসরাইলি বাহিনীকে অস্ত্রসহ যেকোনো ধরনের সহযোগিতা বন্ধ করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান। অন্যথায়, কথিত ইসরাইলিদের করুণ পরিণতি বরণ করতে হবে। তিনি আরও বলেন, “গাজায় ইসরাইলি দখলদার বাহিনী যা করছে, তা কোনো যুদ্ধ নয়; বরং এটি মানবতাবিরোধী অপরাধ। তাদের নির্মমতা ও নিষ্ঠুরতা থেকে রেহাই পাচ্ছে না নারী, শিশু, বৃদ্ধসহ বেসামরিক স্থাপনাও। এমনকি হাসপাতাল ও দাতব্য প্রতিষ্ঠানও তাদের জিঘাংসা থেকে মুক্ত নয়।” এখন সময় এসেছে ইহুদীদের পণ্য বর্জনের। “শুধু তাদের পণ্য বর্জন করলেই হবে না, বরং যেখানে ইহুদী দেখা যাবে, সেখানেই তাদের প্রতি ঘৃণা প্রদর্শন ও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। মুসলিম উম্মাহর নতুন প্রজন্মকে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে ইহুদীবাদীদের সকল ষড়যন্ত্র ও অপতৎপরতা রুখে দিতে হবে।” পথসভা শেষে মিছিল বের হয়, যেখানে ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরও দেব রক্ত’, ‘বিশ্বের মুসলিম এক হও’, ‘বদরের হাতিয়ার গর্জে ওঠো আরেকবার’, ‘শিশুদের ওপর হামলা কেন’, ‘ফিলিস্তিনে হামলা কেন, জাতিসংঘ জবাব চাই’—এমন স্লোগান দেওয়া হয়। বিক্ষোভ মিছিলে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য নাজিম উদ্দীন মোল্লা, প্রচার ও মিডিয়া সেক্রেটারি আতাউর রহমান সরকারসহ আরও অনেকে।