বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে দেশব্যাপী এক উত্তাল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। গত ৭ মে রাত ১০টার পর এই আন্দোলনের সূচনা হয়, যখন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহর ডাকে যমুনার সামনে বিক্ষোভকারীরা একত্রিত হতে থাকে। রাতভর চলা বিক্ষোভের পর শুক্রবার বাদ জুমা, যমুনার পাশে ফোয়ারার সামনে এক বিশাল জমায়েত অনুষ্ঠিত হয়। এতে অনেকেই আওয়ামিলীগ নিষিদ্ধের দাবি জানায়। বিক্ষোভের পর শাহবাগ ব্লকেডের ডাকও দেওয়া হয়, যা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের পক্ষ থেকে নাটক হিসেবে মন্তব্য করা হয়। তিনি শাহবাগে জমায়েতের ঘটনার প্রেক্ষিতে বিস্ময় প্রকাশ করে প্রশ্ন তোলেন, ‘যে শাহবাগে মিছিল ও মিটিং করা যাবে না, সেখানে কীভাবে সরকারী দলের সহায়তায় এনসিপি তাদের মিছিল করতে পারে?’ বিএনপির এই নেতা অভিযোগ করেন যে, তাদের দলের নেতা-কর্মীরা দীর্ঘ ১৭ বছর বাড়িতে ঘুমাতে পারিনি, এমনকি তাদের জীবন থেকে এই দীর্ঘ সময়টা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া, মির্জা আব্বাসের মতে, বিএনপি একমাত্র দল যারা দেশের শত্রুদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করছে এবং মাঠে রয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘এই আন্দোলন দেশের মানুষের প্রতি অঙ্গীকার এবং তাদের অধিকার রক্ষার জন্য।’ তাঁর মতে, দেশের পরিস্থিতি এখন এমন যে, জনগণের স্বাধীনতা নিয়ে বড় প্রশ্ন উঠছে। তিনি সরকারের বিরুদ্ধে এই ইস্যুতে স্পষ্ট অবস্থান নিয়েছেন। এদিকে, সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বিদেশ যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি কিছু সন্দেহ প্রকাশ করেছেন এবং তার যাত্রার বিষয়ে তদন্ত দাবি করেছেন। বিএনপি নেতা বলেন, ‘হামিদ সাহেব লুঙ্গি পরেও যদি ভিআইপির মাধ্যমে বিদেশ যেতে পারেন, তাহলে কীভাবে তা সম্ভব?’ মির্জা আব্বাস আরও বলেছেন, ‘দেশের অভ্যন্তরে মানুষ স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারে না। কেন সেন্ট মার্টিন, সাজেক, বাঘাইছড়ি যেতে পারি না?’ তিনি এসব প্রশ্ন সরকারের কাছে তুলে ধরেন এবং জানান যে, সরকার জনগণের অধিকার মেনে চলতে ব্যর্থ হয়েছে। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, মির্জা আব্বাসের এই বক্তব্যের পর সরকার এবং বিরোধী দলের মধ্যে উত্তেজনা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। বিএনপি নেতারা সরকারের দুর্নীতি এবং ক্ষমতার অপব্যবহার নিয়ে অভিযোগ জানিয়ে আগামী দিনগুলিতে আরও বৃহত্তর আন্দোলন এবং কর্মসূচি আয়োজনের পরিকল্পনা করছে।