বুধবার (২ জুন) সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (স্কুল ও কলেজ) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০২১ শীর্ষক পর্যালোচনা সভায় বেসরকারি কলেজের অনার্স কোর্সের শিক্ষকদের এমপিও প্রদানের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সভায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়েরের সভাপতিত্বে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সি আর আবরার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানান, বঞ্চিত শিক্ষকদের এমপিও প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ অনুমোদনের জন্য শিগগিরই অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হবে।
বাংলাদেশ বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষক ফেডারেশনের সহসভাপতি মো. জমির হোসেন জানান, সারাদেশে মোট ৪৯৫টি কলেজে প্রায় ৩,৫০০ জন শিক্ষক কর্মরত রয়েছেন, যারা ১৯৯২ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে দীর্ঘ ৩২ বছর ধরে কোনো প্রকার বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না। তিনি আরও জানান, একই কলেজে এইচএসসি ও ডিগ্রি পাস কোর্সের শিক্ষকগণ এমপিওভুক্ত হলেও স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর কোর্সের শিক্ষকরা এমপিও পান না।
জমির হোসেনের মতে, বার্ষিক মাত্র ১১১ কোটি টাকা হলেই এসব শিক্ষকের এমপিওভুক্তি সম্ভব। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, দীর্ঘ ৩২ বছর বেতন না পাওয়া একজন শিক্ষকের জন্য এটি একটি বড় কষ্ট ও বঞ্চনার বিষয়। শিক্ষা উপদেষ্টা ড. সি আর আবরার এ বিষয়ে মানবিক হয়ে বঞ্চিত শিক্ষকদের এমপিও অনুমোদনের জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তবে এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন লাগবে।
এদিকে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব তাজকির উজ জামান বলেন, “বেসরকারি কলেজের অনার্স-মাস্টার্স কোর্সের শিক্ষকদের এমপিওর জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে ১১২ কোটি টাকা চেয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পত্র পাঠানো হবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে।”
সভায় কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সচিব, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) চেয়ারম্যান, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বোর্ড ঢাকার চেয়ারম্যানসহ বঞ্চিত বিভিন্ন বেসরকারি কলেজের স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর কোর্সের শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।
এ সিদ্ধান্ত বঞ্চিত শিক্ষকদের জন্য একটি নতুন আশা নিয়ে এসেছে, যা তাদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।