হলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা ডিন কেইন, যিনি ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত টিভি সিরিজ লুইস এন্ড ক্লার্ক: দ্য নিউ অ্যাডভেঞ্চার অব সুপারম্যান-এ সুপারম্যানের ভূমিকায় অভিনয় করে বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করেছিলেন, এবার বাস্তব জীবনে ‘নায়ক’ হতে চলেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের মার্কিন অভিবাসন ও শুল্ক প্রয়োগ সংস্থা (আইস)-তে যোগ দিচ্ছেন তিনি। বর্তমানে শপথ নেওয়া পুলিশ অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করা কেইন শিগগিরই আইস-এর অনারারি অফিসার হিসেবে শপথ গ্রহণ করবেন বলে যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র দপ্তর সূত্রে জানা গেছে। এক সাক্ষাৎকারে ডিন কেইন জানিয়েছেন, তিনি জনগণকে আইস-এ যোগ দিতে উৎসাহিত করতে একটি প্রচারণামূলক ভিডিও প্রকাশ করেছিলেন। এরপর বিষয়টি ব্যাপক আলোচনায় এলে আইস-এর কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে তার যোগাযোগ হয়। এই যোগাযোগের সূত্র ধরেই তিনি নিজে এই সংস্থায় যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তার এই উদ্যোগ আইস-এর চলমান ১০ হাজার নতুন জনবল নিয়োগ অভিযানকে আরও গতিশীল করেছে বলে সংস্থাটি জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব ট্রিসিয়া ম্যাকলাফলিন এক বিবৃতিতে বলেন, “সুপারম্যান খ্যাত ডিন কেইন এখন বাস্তব জীবনে নায়ক হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন। আমরা চাই, আমেরিকার সাহসী নাগরিকরা আইস-এ যোগ দিয়ে দেশের সুরক্ষায় অবদান রাখুক।” কেইনের প্রচারণা এবং তার আইস-এ যোগদানের সিদ্ধান্ত সংস্থাটির নিয়োগ কার্যক্রমে নতুন উদ্দীপনা যোগ করেছে। ২০২৫ সালে পুনরায় ক্ষমতায় আসা প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অভিবাসনবিরোধী নীতি আরও কঠোর করেছেন। তার ঘোষণা অনুযায়ী, প্রতিবছর ১০ লাখ অবৈধ অভিবাসীকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কারের পরিকল্পনা রয়েছে। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে আইস-এর জন্য ৭৬ বিলিয়ন ডলারের বিশাল বাজেট বরাদ্দ করা হয়েছে, যা সংস্থাটির পূর্ববর্তী বাজেটের তুলনায় প্রায় ১০ গুণ বেশি। বর্তমানে আইস-এর ২০ হাজার কর্মকর্তা থাকলেও নতুন নিয়োগের মাধ্যমে এই সংখ্যা ৩০ হাজারে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে। আইস-এর প্রচারণামূলক পোস্টার ক্যাম্পেইনও ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন রিক্রুটমেন্ট পোস্টারের আদলে তৈরি এই বিজ্ঞাপনগুলোতে ‘আমেরিকা নিডস ইউ’ এবং ‘ডিফেন্ড দ্য হোমল্যান্ড’ স্লোগান ব্যবহার করা হয়েছে, যা জনমনে দেশপ্রেমী উদ্দীপনা জাগিয়েছে। ডিন কেইনের এই পদক্ষেপ তার ভক্তদের কাছে বিস্ময়কর হলেও অনুপ্রেরণাদায়ক। পর্দার সুপারম্যান থেকে বাস্তব জীবনের নায়ক হওয়ার এই যাত্রায় তিনি নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা করছেন, যা যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতি বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।